photo

বুধবার, ২২ জানুয়ারী, ২০১৪

মুক্তাগাছায় শিশুদের চিকিত্সায় বাসক পাতা


মনোনেশ দাস:সাম্প্রতিক সময়ে ঠান্ডাজনিত কারণে শিশুদের জ্বর সর্দি কাশি রোগ বালাই বেড়েছে। মুক্তাগাছার গ্রামাঞ্চলে এসমস্ত রোগের রক্ষা কবচ হিসাবে ব্যবহূত হচ্ছে বাসক পাতা। গ্রাম বাংলার নবজাত শিশুর অসুখ-বিসুখে প্রথম ডাক্তার তার মা। রান্না ঘরে ব্যবহূত রসুন ,সর্ষের তেল ইত্যাদির মত আঙ্গিনায় প্রাপ্ত বাসক পাতাও ওষুধের উপকরণ। বাড়িতে কারো কফ-কাশি হলে আঙ্গিনার ঝোপ-ঝাড় থেকে বাসক পাতা তুলে এনে তা পিষে এক চামচ রস হালকা গরম করে খেলে কাশি সেরে যায় একথা গ্রামাঞ্চলের প্রায় সব মায়েরই জানা। কাশির ওষুধ হিসেবে বাসকের কথা আয়ুর্বেদ এবং চরক সংহিতায় উল্লেখ রয়েছে। বৈদিক যুগে এর ব্যবহারের নির্দেশ রয়েছে শরীরের ঊর্ধ্বভাগের রোগে। বিশেষ করে ফুসফুস সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগে এর ব্যবহার সার্বজনীন। বাসক গাছ প্রায় ৫/৬ ফুট উঁচু হয়। আষাঢ় শ্রাবণে সাদা ফুল হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম 'আদাটুডা বেসিকা নিছ।' বাংলাদেশের সর্বত্র গ্রামাঞ্চলে লোকালয়ের আশেপাশে ঝোপ-জঙ্গলে এ গাছ পাওয়া যায়। অনেক গৃহস্থ বাড়ির আঙ্গিনার চারপাশে বাসক গাছ লাগিয়ে বেড়া দেন। দেশজ চিকিত্সায় কাশি ছাড়াও বিভিন্ন রোগে এর ব্যবহার রয়েছে। অম্লপিত্ত, কৃমি, রক্তশ্রুতি শ্বাসকষ্ট, গাত্র দুর্গন্ধ, খোস পাঁচড়া, অর্শ, বসন্ত, টিউমার এবং জীবাণুনাশে এমনকি গায়ের রং ফর্সাকরণেও বাসক পাতা ব্যবহারের কথা প্রাচীন গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে। খোকশিয়া গ্রামের জনৈক শিক্ষক জানান, তিনি সব রোগেই বাসক পাতার চিকিত্সা দেন। তার বিশ্বাস, বাসক পাতা সর্ব রোগের মহৌষধ। আধুনিক চিকিত্সার দোর্দন্ড প্রতাপে বিনষ্ট হচ্ছে গ্রাম বাংলার আবহমান চিকিত্সা পরম্পরা। সে পথেই বিস্তৃতির অতলে বাসক পাতা হারিয়ে যাচ্ছে। ( লেখাটি পড়া হয়েছে ৩৩ বার ) Tweet Beshto

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন