মনোনেশ দাস : মুক্তাগাছায় অনেক পানের বরজ আছে। পান চারা গাছ বড় আকার হতে হতে আঁকড়ে ধরে সোজা হয়ে দাঁড়ায় ফলার উপর।
এই অঞ্চলে বংশপরম্পরায় পুরনো চাষ হিসেবে সৌখিন কৃষকরা পান চাষ করে আসছেন। কেউ স্বাবলম্বী ও লাভবান হয়েছেন। আবার বাজারে দাম না পাওয়া, সঠিক চাষাবাদ ব্যবস্থা না জানায় কম বেশি লোকসানও গুনেন।
পাশের একটি গ্রামে ঘরে ঘরে পান চাষী ছিল। ডালে ডালে কচি আকার বেড়ে পরিপুষ্ট হয়ে মানুষের আহারের উপযোগী হওয়ার প্রধান অবলম্বন এই ফলা । তৈরি হয় বাঁশ দিয়ে। পাঁচ হাত লম্বা একেকটি ফলা তৈরি করতে শিল্পী বা কারিগরি প্রয়োজন পড়ে।
শ্রীপুর মুজাটি গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক ও শফিকুল ইসলাম ফলা তৈরি করতে এসেছেন পার্শ্ববর্তী তারাটি গ্রামে। এমৌসুমে ফলার প্রয়োজন দেখা দেয় চাষিদের।
ষাট বছরের রাজ্জাক বলেন, বার বছর বয়স থেকে এটি করছি। ঝাড় থেকে নির্দিষ্ট মাপে বাঁশ কেটে পানিতে ভিজিয়ে রাখি। দুসপ্তাহ ভিজিয়ে রাখলে ফলায় পোকা ধরে না, কালো হয়ে দুর্বল হওয়া থেকে ঠেকায়। এক কাঠা থেকে পাঁচ কাঠা জমিতে পান চাষের বরজ। এক কাঠায় ৪০ পুন ফলা লাগে।২০ পুনে এক কাউন । ২০ পুন ফলা তৈরি করতে মজুরি নেন ১২শ টাকা।
কাক ডাকা ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত দশ পুনের কম বেশি তৈরি করা যায়। বরজে হেলে দুলে গজিয়ে ওঠা নূয়ে পড়া শিশু বা চারা গাছ নামানো হয়। একেকটি গাছে চারটি ফলা মাটিতে পুঁতে বাঁকা করে স্থাপন করাটাও কারিগরের কাজের অংশ।
জানা যায়, পান Piperaceae পরিবারের গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলের একপ্রকার লতাজাতীয় গাছের পাতা। আর্য এবং আরবগণ পানকে তাম্বুল নামে অভিহিত করত। নিশ্বাসকে সুরভিত করা এবং ঠোঁট ও জিহবাকে লাল করার জন্য মানুষ পান খায়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন