 নিয়ামুল কবীর সজল, ময়মনসিংহ
'বিল্লালই তো দলটারে খাইছে। তার কথায়ই সব কিছু হয়।' ক্ষোভ নিয়ে কথাগুলো বললেন মুক্তাগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগে দীর্ঘ সময় সভাপতির দায়িত্ব পালনকারী (সদ্যবিদায়ী) আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা আবু তাহের সরকার ছানা মিয়া। শুধু তিনিই যে এমন মন্তব্য করলেন তা নয়, স্থানীয় আওয়ামী লীগের অনেক কর্মী-সমর্থকের বক্তব্য এখন এমনই। দলীয় এমপির পক্ষে সংগঠন, প্রশাসন- সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করায় বিল্লাল হোসেন সরকার এখন অনেকেরই সমালোচনার পাত্র। 'পুরো উপজেলাই চলে বিল্লালের কথায়'- এমন মন্তব্য মুক্তাগাছার হাটে-ঘাটে-মাঠে মানুষের মুখে মুখে। বর্তমান সময়ে মুক্তাগাছায় বহুল আলোচিত ও সমালোচিত বিল্লাল হোসেন সরকার গত ১৯ জুলাইয়ের দলীয় কাউন্সিলে উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। আগেও তিনি এ দায়িত্বে ছিলেন।
বিল্লাল হোসেন সরকারের রাজনীতিতে আসা যুবলীগের মাধ্যমে। প্রায় ১০ বছর আগের দলীয় কাউন্সিলে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। কিছুদিন পর দলীয় সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক সরকার মারা যাওয়ার পর বিল্লালের ভাগ্য খুলে যায়। তিনি দায়িত্ব পান ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের। এরপর মুক্তাগাছা আওয়ামী লীগের অন্যতম জনপ্রিয় নেত্রী প্রয়াত রাশিদা মহিউদ্দিনের স্নেহের ছায়ায় আলোচিত নেতা হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন বিল্লাল। বিগত সংসদ নির্বাচনে কে এম খালিদ বাবু মুক্তাগাছায় নতুন মুখ হিসেবে দলীয় প্রার্থী হওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই স্থানীয় নেতৃত্বকে গুরুত্ব দেন তিনি। ওই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিল্লাল হয়ে ওঠেন এমপির ডান হাত। খালিদ বাবু এমপি নির্বাচিত হলে এমপির পর মূলত বিল্লালই হয়ে ওঠেন সব কিছুর নিয়ন্ত্রক। এমপির ঘনিষ্ঠজন হিসেবে বিল্লাল সংগঠন ও প্রশাসনের সব কিছুর দেখভালের দায়িত্ব পেয়ে যান। সংসদ নির্বাচনের কিছু সময় পর পৌরসভা নির্বাচন হলে বিল্লাল হোসেন সরকার দলীয় সমর্থন পেয়ে মুক্তাগাছায় মেয়র পদে প্রার্থী হন। কিন্তু দলীয় সমর্থন পেয়েও তিনি মুক্তাগাছা পৌর মেয়র পদে তৃতীয় হন। বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুল হাই।
জানা গেছে, এলাকায় দলীয় এমপি কে এম খালিদ বাবুর তেমন বদনাম নেই। কিন্তু সবারই অভিযোগের তীর বিল্লালের দিকে। এ অবস্থায় মানুষের ধারণা, এমপি যদি এসব ঘটনাকে প্রশ্রয় না দিতেন তাহলে বিল্লালের পক্ষে কিছুই করা সম্ভব হতো না। এর দায়ভার এমপিকেই নিতে হবে। দলীয় অনেকেরই মন্তব্য, এমপি অনেক সময় ঢাকায় থাকায় তিনি বিল্লালকে বিভিন্ন বিষয়ে দেখাশোনার দায়িত্ব দেন। আর এতে তিনি নিজেই এমপি বনে যান। থানা, ইউএনও অফিস, কর্মসৃজন প্রকল্প, স্কুলের শিক্ষক নিয়োগ, ম্যানেজিং কমিটি গঠনসহ সব কিছুতেই হস্তক্ষেপ করেন তিনি। মুক্তাগাছা থানার পুলিশ কাকে ধরবে আর কাকে ছাড়বে- তাও তাঁর কথা ছাড়া হয় না। বিল্লালের হুমকি-ধমকির কারণে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মুক্তাগাছা থানা পুলিশকে প্রায়ই বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। শিক্ষকসহ স্থানীয় যেকোনো নিয়োগে বিল্লালের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ হস্তক্ষেপ থাকে।
স্থানীয় দলীয় নেতা-কর্মীরা জানায়, বিল্লাল হোসেন সরকারের মুন সিনেমা হলের ব্যক্তিগত অফিসে প্রায় দিনই সন্ধ্যার পর বৈঠক হয়। সেখান থেকেই নিয়ন্ত্রিত হয় পুরো উপজেলার সব কিছু। জানা গেছে, ছয়জনের একটি সিন্ডিকেট পুরো মুক্তাগাছায় এখন ব্যাপকভাবে আলোচিত-সমালোচিত। আর আলোচিত এ সিন্ডিকেটের অন্তত চারজন ওই মুন সিনেমা হলের অফিসে নিয়মিত বসেন। সবাই বিল্লালের অনুগত, তাঁরাই নিয়ন্ত্রণ করেন সব কিছু।
আওয়ামী লীগের স্থানীয় একাধিক নেতা-কর্মী জানায়, সংগঠন ও প্রশাসনের বিভিন্ন বিষয়ে বিল্লালের অযাচিত হস্তক্ষেপ ও বিতর্কিত ভূমিকার কারণে দলীয় এমপি ও দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। আগামী নির্বাচনে ভোটাররা জাতীয় ইস্যুর পাশাপাশি স্থানীয় ইস্যু বিবেচনায় নিলে মুক্তাগাছায় বিল্লাল হোসেন সরকারই হবেন সমালোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু। তাঁর কারণেই দল বিপর্যয়কর অবস্থায় পড়তে পারে।
মুক্তাগাছার সাবেক শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. বছিরউদ্দিন জানান, সন্ধ্যার পর মুন সিনেমা হলের দ্বিতীয় তলা হয়ে ওঠে 'হাওয়া ভবন'। সেখানেই সব কিছুর পরিকল্পনা হয়। মুক্তাগাছা পৌরসভার মেয়র আবদুল হাই জানান, থানা, পিআইও অফিস, শিক্ষা অফিস- সব কিছুতেই বিল্লাল। বিগত কমিটির আরেক আওয়ামী লীগ নেতা মুশফিকুর রহমান জানান, নিয়োগ-বাণিজ্য করে পুরো উপজেলার শিক্ষাব্যবস্থাকেই ধ্বংস করে দিয়েছেন বিল্লাল হোসেন।
আলোচিত বিল্লাল হোসেন সরকার বলেন, 'দলের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় আমাকে অনেক কিছু দেখতে হয়। কিন্তু আমি কোথাও প্রভাব বিস্তার করি- এটি ঠিক নয়। মুন সিনেমা হল আমার নিজের। ব্যবসায়িক প্রয়োজনেই আমি সেখানে সন্ধ্যার পর বসি। আর দলীয় নেতা-কর্মীরাও অনেকে সেখানে আমার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতে আসে।'
বিল্লাল হোসেন সরকার খারাপ মানুষ নন দাবি করে স্থানীয় এমপি কে এম খালিদ বাবু জানান, তাঁর বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগগুলো সঠিক নয়। পারিবারিকভাবে আগে থেকেই বিল্লালের আর্থিক অবস্থা ভালো।
বিল্লালের ব্যাপারে অনেক অভিযোগ। এসব আপনার জনপ্রিয়তায় ধস নামাতে পারে বলে মনে করেন কি? এমন প্রশ্নের জবাবে খালিদ বলেন, 'বিল্লাল এমন কিছু করছেন না, যাতে আমার ইমেজ নষ্ট হয়।'
নিয়ামুল কবীর সজল, ময়মনসিংহ
'বিল্লালই তো দলটারে খাইছে। তার কথায়ই সব কিছু হয়।' ক্ষোভ নিয়ে কথাগুলো বললেন মুক্তাগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগে দীর্ঘ সময় সভাপতির দায়িত্ব পালনকারী (সদ্যবিদায়ী) আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা আবু তাহের সরকার ছানা মিয়া। শুধু তিনিই যে এমন মন্তব্য করলেন তা নয়, স্থানীয় আওয়ামী লীগের অনেক কর্মী-সমর্থকের বক্তব্য এখন এমনই। দলীয় এমপির পক্ষে সংগঠন, প্রশাসন- সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করায় বিল্লাল হোসেন সরকার এখন অনেকেরই সমালোচনার পাত্র। 'পুরো উপজেলাই চলে বিল্লালের কথায়'- এমন মন্তব্য মুক্তাগাছার হাটে-ঘাটে-মাঠে মানুষের মুখে মুখে। বর্তমান সময়ে মুক্তাগাছায় বহুল আলোচিত ও সমালোচিত বিল্লাল হোসেন সরকার গত ১৯ জুলাইয়ের দলীয় কাউন্সিলে উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। আগেও তিনি এ দায়িত্বে ছিলেন।
বিল্লাল হোসেন সরকারের রাজনীতিতে আসা যুবলীগের মাধ্যমে। প্রায় ১০ বছর আগের দলীয় কাউন্সিলে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। কিছুদিন পর দলীয় সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক সরকার মারা যাওয়ার পর বিল্লালের ভাগ্য খুলে যায়। তিনি দায়িত্ব পান ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের। এরপর মুক্তাগাছা আওয়ামী লীগের অন্যতম জনপ্রিয় নেত্রী প্রয়াত রাশিদা মহিউদ্দিনের স্নেহের ছায়ায় আলোচিত নেতা হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন বিল্লাল। বিগত সংসদ নির্বাচনে কে এম খালিদ বাবু মুক্তাগাছায় নতুন মুখ হিসেবে দলীয় প্রার্থী হওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই স্থানীয় নেতৃত্বকে গুরুত্ব দেন তিনি। ওই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিল্লাল হয়ে ওঠেন এমপির ডান হাত। খালিদ বাবু এমপি নির্বাচিত হলে এমপির পর মূলত বিল্লালই হয়ে ওঠেন সব কিছুর নিয়ন্ত্রক। এমপির ঘনিষ্ঠজন হিসেবে বিল্লাল সংগঠন ও প্রশাসনের সব কিছুর দেখভালের দায়িত্ব পেয়ে যান। সংসদ নির্বাচনের কিছু সময় পর পৌরসভা নির্বাচন হলে বিল্লাল হোসেন সরকার দলীয় সমর্থন পেয়ে মুক্তাগাছায় মেয়র পদে প্রার্থী হন। কিন্তু দলীয় সমর্থন পেয়েও তিনি মুক্তাগাছা পৌর মেয়র পদে তৃতীয় হন। বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুল হাই।
জানা গেছে, এলাকায় দলীয় এমপি কে এম খালিদ বাবুর তেমন বদনাম নেই। কিন্তু সবারই অভিযোগের তীর বিল্লালের দিকে। এ অবস্থায় মানুষের ধারণা, এমপি যদি এসব ঘটনাকে প্রশ্রয় না দিতেন তাহলে বিল্লালের পক্ষে কিছুই করা সম্ভব হতো না। এর দায়ভার এমপিকেই নিতে হবে। দলীয় অনেকেরই মন্তব্য, এমপি অনেক সময় ঢাকায় থাকায় তিনি বিল্লালকে বিভিন্ন বিষয়ে দেখাশোনার দায়িত্ব দেন। আর এতে তিনি নিজেই এমপি বনে যান। থানা, ইউএনও অফিস, কর্মসৃজন প্রকল্প, স্কুলের শিক্ষক নিয়োগ, ম্যানেজিং কমিটি গঠনসহ সব কিছুতেই হস্তক্ষেপ করেন তিনি। মুক্তাগাছা থানার পুলিশ কাকে ধরবে আর কাকে ছাড়বে- তাও তাঁর কথা ছাড়া হয় না। বিল্লালের হুমকি-ধমকির কারণে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মুক্তাগাছা থানা পুলিশকে প্রায়ই বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। শিক্ষকসহ স্থানীয় যেকোনো নিয়োগে বিল্লালের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ হস্তক্ষেপ থাকে।
স্থানীয় দলীয় নেতা-কর্মীরা জানায়, বিল্লাল হোসেন সরকারের মুন সিনেমা হলের ব্যক্তিগত অফিসে প্রায় দিনই সন্ধ্যার পর বৈঠক হয়। সেখান থেকেই নিয়ন্ত্রিত হয় পুরো উপজেলার সব কিছু। জানা গেছে, ছয়জনের একটি সিন্ডিকেট পুরো মুক্তাগাছায় এখন ব্যাপকভাবে আলোচিত-সমালোচিত। আর আলোচিত এ সিন্ডিকেটের অন্তত চারজন ওই মুন সিনেমা হলের অফিসে নিয়মিত বসেন। সবাই বিল্লালের অনুগত, তাঁরাই নিয়ন্ত্রণ করেন সব কিছু।
আওয়ামী লীগের স্থানীয় একাধিক নেতা-কর্মী জানায়, সংগঠন ও প্রশাসনের বিভিন্ন বিষয়ে বিল্লালের অযাচিত হস্তক্ষেপ ও বিতর্কিত ভূমিকার কারণে দলীয় এমপি ও দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। আগামী নির্বাচনে ভোটাররা জাতীয় ইস্যুর পাশাপাশি স্থানীয় ইস্যু বিবেচনায় নিলে মুক্তাগাছায় বিল্লাল হোসেন সরকারই হবেন সমালোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু। তাঁর কারণেই দল বিপর্যয়কর অবস্থায় পড়তে পারে।
মুক্তাগাছার সাবেক শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. বছিরউদ্দিন জানান, সন্ধ্যার পর মুন সিনেমা হলের দ্বিতীয় তলা হয়ে ওঠে 'হাওয়া ভবন'। সেখানেই সব কিছুর পরিকল্পনা হয়। মুক্তাগাছা পৌরসভার মেয়র আবদুল হাই জানান, থানা, পিআইও অফিস, শিক্ষা অফিস- সব কিছুতেই বিল্লাল। বিগত কমিটির আরেক আওয়ামী লীগ নেতা মুশফিকুর রহমান জানান, নিয়োগ-বাণিজ্য করে পুরো উপজেলার শিক্ষাব্যবস্থাকেই ধ্বংস করে দিয়েছেন বিল্লাল হোসেন।
আলোচিত বিল্লাল হোসেন সরকার বলেন, 'দলের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় আমাকে অনেক কিছু দেখতে হয়। কিন্তু আমি কোথাও প্রভাব বিস্তার করি- এটি ঠিক নয়। মুন সিনেমা হল আমার নিজের। ব্যবসায়িক প্রয়োজনেই আমি সেখানে সন্ধ্যার পর বসি। আর দলীয় নেতা-কর্মীরাও অনেকে সেখানে আমার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতে আসে।'
বিল্লাল হোসেন সরকার খারাপ মানুষ নন দাবি করে স্থানীয় এমপি কে এম খালিদ বাবু জানান, তাঁর বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগগুলো সঠিক নয়। পারিবারিকভাবে আগে থেকেই বিল্লালের আর্থিক অবস্থা ভালো।
বিল্লালের ব্যাপারে অনেক অভিযোগ। এসব আপনার জনপ্রিয়তায় ধস নামাতে পারে বলে মনে করেন কি? এমন প্রশ্নের জবাবে খালিদ বলেন, 'বিল্লাল এমন কিছু করছেন না, যাতে আমার ইমেজ নষ্ট হয়।'
photo
মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট, ২০১৩
'বিল্লালই তো দলটারে খাইছে।
 নিয়ামুল কবীর সজল, ময়মনসিংহ
'বিল্লালই তো দলটারে খাইছে। তার কথায়ই সব কিছু হয়।' ক্ষোভ নিয়ে কথাগুলো বললেন মুক্তাগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগে দীর্ঘ সময় সভাপতির দায়িত্ব পালনকারী (সদ্যবিদায়ী) আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা আবু তাহের সরকার ছানা মিয়া। শুধু তিনিই যে এমন মন্তব্য করলেন তা নয়, স্থানীয় আওয়ামী লীগের অনেক কর্মী-সমর্থকের বক্তব্য এখন এমনই। দলীয় এমপির পক্ষে সংগঠন, প্রশাসন- সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করায় বিল্লাল হোসেন সরকার এখন অনেকেরই সমালোচনার পাত্র। 'পুরো উপজেলাই চলে বিল্লালের কথায়'- এমন মন্তব্য মুক্তাগাছার হাটে-ঘাটে-মাঠে মানুষের মুখে মুখে। বর্তমান সময়ে মুক্তাগাছায় বহুল আলোচিত ও সমালোচিত বিল্লাল হোসেন সরকার গত ১৯ জুলাইয়ের দলীয় কাউন্সিলে উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। আগেও তিনি এ দায়িত্বে ছিলেন।
বিল্লাল হোসেন সরকারের রাজনীতিতে আসা যুবলীগের মাধ্যমে। প্রায় ১০ বছর আগের দলীয় কাউন্সিলে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। কিছুদিন পর দলীয় সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক সরকার মারা যাওয়ার পর বিল্লালের ভাগ্য খুলে যায়। তিনি দায়িত্ব পান ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের। এরপর মুক্তাগাছা আওয়ামী লীগের অন্যতম জনপ্রিয় নেত্রী প্রয়াত রাশিদা মহিউদ্দিনের স্নেহের ছায়ায় আলোচিত নেতা হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন বিল্লাল। বিগত সংসদ নির্বাচনে কে এম খালিদ বাবু মুক্তাগাছায় নতুন মুখ হিসেবে দলীয় প্রার্থী হওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই স্থানীয় নেতৃত্বকে গুরুত্ব দেন তিনি। ওই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিল্লাল হয়ে ওঠেন এমপির ডান হাত। খালিদ বাবু এমপি নির্বাচিত হলে এমপির পর মূলত বিল্লালই হয়ে ওঠেন সব কিছুর নিয়ন্ত্রক। এমপির ঘনিষ্ঠজন হিসেবে বিল্লাল সংগঠন ও প্রশাসনের সব কিছুর দেখভালের দায়িত্ব পেয়ে যান। সংসদ নির্বাচনের কিছু সময় পর পৌরসভা নির্বাচন হলে বিল্লাল হোসেন সরকার দলীয় সমর্থন পেয়ে মুক্তাগাছায় মেয়র পদে প্রার্থী হন। কিন্তু দলীয় সমর্থন পেয়েও তিনি মুক্তাগাছা পৌর মেয়র পদে তৃতীয় হন। বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুল হাই।
জানা গেছে, এলাকায় দলীয় এমপি কে এম খালিদ বাবুর তেমন বদনাম নেই। কিন্তু সবারই অভিযোগের তীর বিল্লালের দিকে। এ অবস্থায় মানুষের ধারণা, এমপি যদি এসব ঘটনাকে প্রশ্রয় না দিতেন তাহলে বিল্লালের পক্ষে কিছুই করা সম্ভব হতো না। এর দায়ভার এমপিকেই নিতে হবে। দলীয় অনেকেরই মন্তব্য, এমপি অনেক সময় ঢাকায় থাকায় তিনি বিল্লালকে বিভিন্ন বিষয়ে দেখাশোনার দায়িত্ব দেন। আর এতে তিনি নিজেই এমপি বনে যান। থানা, ইউএনও অফিস, কর্মসৃজন প্রকল্প, স্কুলের শিক্ষক নিয়োগ, ম্যানেজিং কমিটি গঠনসহ সব কিছুতেই হস্তক্ষেপ করেন তিনি। মুক্তাগাছা থানার পুলিশ কাকে ধরবে আর কাকে ছাড়বে- তাও তাঁর কথা ছাড়া হয় না। বিল্লালের হুমকি-ধমকির কারণে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মুক্তাগাছা থানা পুলিশকে প্রায়ই বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। শিক্ষকসহ স্থানীয় যেকোনো নিয়োগে বিল্লালের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ হস্তক্ষেপ থাকে।
স্থানীয় দলীয় নেতা-কর্মীরা জানায়, বিল্লাল হোসেন সরকারের মুন সিনেমা হলের ব্যক্তিগত অফিসে প্রায় দিনই সন্ধ্যার পর বৈঠক হয়। সেখান থেকেই নিয়ন্ত্রিত হয় পুরো উপজেলার সব কিছু। জানা গেছে, ছয়জনের একটি সিন্ডিকেট পুরো মুক্তাগাছায় এখন ব্যাপকভাবে আলোচিত-সমালোচিত। আর আলোচিত এ সিন্ডিকেটের অন্তত চারজন ওই মুন সিনেমা হলের অফিসে নিয়মিত বসেন। সবাই বিল্লালের অনুগত, তাঁরাই নিয়ন্ত্রণ করেন সব কিছু।
আওয়ামী লীগের স্থানীয় একাধিক নেতা-কর্মী জানায়, সংগঠন ও প্রশাসনের বিভিন্ন বিষয়ে বিল্লালের অযাচিত হস্তক্ষেপ ও বিতর্কিত ভূমিকার কারণে দলীয় এমপি ও দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। আগামী নির্বাচনে ভোটাররা জাতীয় ইস্যুর পাশাপাশি স্থানীয় ইস্যু বিবেচনায় নিলে মুক্তাগাছায় বিল্লাল হোসেন সরকারই হবেন সমালোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু। তাঁর কারণেই দল বিপর্যয়কর অবস্থায় পড়তে পারে।
মুক্তাগাছার সাবেক শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. বছিরউদ্দিন জানান, সন্ধ্যার পর মুন সিনেমা হলের দ্বিতীয় তলা হয়ে ওঠে 'হাওয়া ভবন'। সেখানেই সব কিছুর পরিকল্পনা হয়। মুক্তাগাছা পৌরসভার মেয়র আবদুল হাই জানান, থানা, পিআইও অফিস, শিক্ষা অফিস- সব কিছুতেই বিল্লাল। বিগত কমিটির আরেক আওয়ামী লীগ নেতা মুশফিকুর রহমান জানান, নিয়োগ-বাণিজ্য করে পুরো উপজেলার শিক্ষাব্যবস্থাকেই ধ্বংস করে দিয়েছেন বিল্লাল হোসেন।
আলোচিত বিল্লাল হোসেন সরকার বলেন, 'দলের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় আমাকে অনেক কিছু দেখতে হয়। কিন্তু আমি কোথাও প্রভাব বিস্তার করি- এটি ঠিক নয়। মুন সিনেমা হল আমার নিজের। ব্যবসায়িক প্রয়োজনেই আমি সেখানে সন্ধ্যার পর বসি। আর দলীয় নেতা-কর্মীরাও অনেকে সেখানে আমার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতে আসে।'
বিল্লাল হোসেন সরকার খারাপ মানুষ নন দাবি করে স্থানীয় এমপি কে এম খালিদ বাবু জানান, তাঁর বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগগুলো সঠিক নয়। পারিবারিকভাবে আগে থেকেই বিল্লালের আর্থিক অবস্থা ভালো।
বিল্লালের ব্যাপারে অনেক অভিযোগ। এসব আপনার জনপ্রিয়তায় ধস নামাতে পারে বলে মনে করেন কি? এমন প্রশ্নের জবাবে খালিদ বলেন, 'বিল্লাল এমন কিছু করছেন না, যাতে আমার ইমেজ নষ্ট হয়।'
নিয়ামুল কবীর সজল, ময়মনসিংহ
'বিল্লালই তো দলটারে খাইছে। তার কথায়ই সব কিছু হয়।' ক্ষোভ নিয়ে কথাগুলো বললেন মুক্তাগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগে দীর্ঘ সময় সভাপতির দায়িত্ব পালনকারী (সদ্যবিদায়ী) আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা আবু তাহের সরকার ছানা মিয়া। শুধু তিনিই যে এমন মন্তব্য করলেন তা নয়, স্থানীয় আওয়ামী লীগের অনেক কর্মী-সমর্থকের বক্তব্য এখন এমনই। দলীয় এমপির পক্ষে সংগঠন, প্রশাসন- সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করায় বিল্লাল হোসেন সরকার এখন অনেকেরই সমালোচনার পাত্র। 'পুরো উপজেলাই চলে বিল্লালের কথায়'- এমন মন্তব্য মুক্তাগাছার হাটে-ঘাটে-মাঠে মানুষের মুখে মুখে। বর্তমান সময়ে মুক্তাগাছায় বহুল আলোচিত ও সমালোচিত বিল্লাল হোসেন সরকার গত ১৯ জুলাইয়ের দলীয় কাউন্সিলে উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। আগেও তিনি এ দায়িত্বে ছিলেন।
বিল্লাল হোসেন সরকারের রাজনীতিতে আসা যুবলীগের মাধ্যমে। প্রায় ১০ বছর আগের দলীয় কাউন্সিলে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। কিছুদিন পর দলীয় সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক সরকার মারা যাওয়ার পর বিল্লালের ভাগ্য খুলে যায়। তিনি দায়িত্ব পান ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের। এরপর মুক্তাগাছা আওয়ামী লীগের অন্যতম জনপ্রিয় নেত্রী প্রয়াত রাশিদা মহিউদ্দিনের স্নেহের ছায়ায় আলোচিত নেতা হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন বিল্লাল। বিগত সংসদ নির্বাচনে কে এম খালিদ বাবু মুক্তাগাছায় নতুন মুখ হিসেবে দলীয় প্রার্থী হওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই স্থানীয় নেতৃত্বকে গুরুত্ব দেন তিনি। ওই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিল্লাল হয়ে ওঠেন এমপির ডান হাত। খালিদ বাবু এমপি নির্বাচিত হলে এমপির পর মূলত বিল্লালই হয়ে ওঠেন সব কিছুর নিয়ন্ত্রক। এমপির ঘনিষ্ঠজন হিসেবে বিল্লাল সংগঠন ও প্রশাসনের সব কিছুর দেখভালের দায়িত্ব পেয়ে যান। সংসদ নির্বাচনের কিছু সময় পর পৌরসভা নির্বাচন হলে বিল্লাল হোসেন সরকার দলীয় সমর্থন পেয়ে মুক্তাগাছায় মেয়র পদে প্রার্থী হন। কিন্তু দলীয় সমর্থন পেয়েও তিনি মুক্তাগাছা পৌর মেয়র পদে তৃতীয় হন। বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুল হাই।
জানা গেছে, এলাকায় দলীয় এমপি কে এম খালিদ বাবুর তেমন বদনাম নেই। কিন্তু সবারই অভিযোগের তীর বিল্লালের দিকে। এ অবস্থায় মানুষের ধারণা, এমপি যদি এসব ঘটনাকে প্রশ্রয় না দিতেন তাহলে বিল্লালের পক্ষে কিছুই করা সম্ভব হতো না। এর দায়ভার এমপিকেই নিতে হবে। দলীয় অনেকেরই মন্তব্য, এমপি অনেক সময় ঢাকায় থাকায় তিনি বিল্লালকে বিভিন্ন বিষয়ে দেখাশোনার দায়িত্ব দেন। আর এতে তিনি নিজেই এমপি বনে যান। থানা, ইউএনও অফিস, কর্মসৃজন প্রকল্প, স্কুলের শিক্ষক নিয়োগ, ম্যানেজিং কমিটি গঠনসহ সব কিছুতেই হস্তক্ষেপ করেন তিনি। মুক্তাগাছা থানার পুলিশ কাকে ধরবে আর কাকে ছাড়বে- তাও তাঁর কথা ছাড়া হয় না। বিল্লালের হুমকি-ধমকির কারণে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মুক্তাগাছা থানা পুলিশকে প্রায়ই বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। শিক্ষকসহ স্থানীয় যেকোনো নিয়োগে বিল্লালের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ হস্তক্ষেপ থাকে।
স্থানীয় দলীয় নেতা-কর্মীরা জানায়, বিল্লাল হোসেন সরকারের মুন সিনেমা হলের ব্যক্তিগত অফিসে প্রায় দিনই সন্ধ্যার পর বৈঠক হয়। সেখান থেকেই নিয়ন্ত্রিত হয় পুরো উপজেলার সব কিছু। জানা গেছে, ছয়জনের একটি সিন্ডিকেট পুরো মুক্তাগাছায় এখন ব্যাপকভাবে আলোচিত-সমালোচিত। আর আলোচিত এ সিন্ডিকেটের অন্তত চারজন ওই মুন সিনেমা হলের অফিসে নিয়মিত বসেন। সবাই বিল্লালের অনুগত, তাঁরাই নিয়ন্ত্রণ করেন সব কিছু।
আওয়ামী লীগের স্থানীয় একাধিক নেতা-কর্মী জানায়, সংগঠন ও প্রশাসনের বিভিন্ন বিষয়ে বিল্লালের অযাচিত হস্তক্ষেপ ও বিতর্কিত ভূমিকার কারণে দলীয় এমপি ও দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। আগামী নির্বাচনে ভোটাররা জাতীয় ইস্যুর পাশাপাশি স্থানীয় ইস্যু বিবেচনায় নিলে মুক্তাগাছায় বিল্লাল হোসেন সরকারই হবেন সমালোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু। তাঁর কারণেই দল বিপর্যয়কর অবস্থায় পড়তে পারে।
মুক্তাগাছার সাবেক শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. বছিরউদ্দিন জানান, সন্ধ্যার পর মুন সিনেমা হলের দ্বিতীয় তলা হয়ে ওঠে 'হাওয়া ভবন'। সেখানেই সব কিছুর পরিকল্পনা হয়। মুক্তাগাছা পৌরসভার মেয়র আবদুল হাই জানান, থানা, পিআইও অফিস, শিক্ষা অফিস- সব কিছুতেই বিল্লাল। বিগত কমিটির আরেক আওয়ামী লীগ নেতা মুশফিকুর রহমান জানান, নিয়োগ-বাণিজ্য করে পুরো উপজেলার শিক্ষাব্যবস্থাকেই ধ্বংস করে দিয়েছেন বিল্লাল হোসেন।
আলোচিত বিল্লাল হোসেন সরকার বলেন, 'দলের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় আমাকে অনেক কিছু দেখতে হয়। কিন্তু আমি কোথাও প্রভাব বিস্তার করি- এটি ঠিক নয়। মুন সিনেমা হল আমার নিজের। ব্যবসায়িক প্রয়োজনেই আমি সেখানে সন্ধ্যার পর বসি। আর দলীয় নেতা-কর্মীরাও অনেকে সেখানে আমার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতে আসে।'
বিল্লাল হোসেন সরকার খারাপ মানুষ নন দাবি করে স্থানীয় এমপি কে এম খালিদ বাবু জানান, তাঁর বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগগুলো সঠিক নয়। পারিবারিকভাবে আগে থেকেই বিল্লালের আর্থিক অবস্থা ভালো।
বিল্লালের ব্যাপারে অনেক অভিযোগ। এসব আপনার জনপ্রিয়তায় ধস নামাতে পারে বলে মনে করেন কি? এমন প্রশ্নের জবাবে খালিদ বলেন, 'বিল্লাল এমন কিছু করছেন না, যাতে আমার ইমেজ নষ্ট হয়।'
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
 
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন