photo

রবিবার, ২৪ মার্চ, ২০১৯

মুক্তাগাছায় কমছে শিল্পের সৌকর্যের পাখি বাবুই


মনোনেশ দাস : ময়মনসিংহের গ্রামাঞ্চলে বাড়ি-ঘরের পাশে তাল, নারিকেল, সুপারি , খেজুর ইত্যাদি গাছে উল্টো ঘরের বাসা বুনাতো পরিচিত পাখি বাবুই । ছেলে-বুড়ো সকলেরই দৃষ্টি কাড়ে এই শিল্প সৌকর্য দেখে । সেই বাবুই আর আগের মত দেখা মেলে না । বাসাও বানাচ্ছে কম । অভিজ্ঞরা বলছেন, চাষাবাদে অতিমাত্রায় কিটনাশক প্রয়োগ করায় কমছে ফড়িংসহ পরিবেশ বান্ধব কীট পতঙ্গ । এতে বাবুই পাখি তার নবাগত ছানাপোনার প্রয়োজনীয় খাবারই জোগাড় করতে পারছে না। কীটনাশকের বহুল ব্যবহার ছাড়াও, টুনটুনি এজাতীয় পাখি লোকালয় ছেড়ে যাচ্ছে যাচ্ছে গাছের অভাবেও। গ্রামাঞ্চলে তাল, নারকেল কিংবা সুপারি, খেজুরের মতো যে সব গাছে তারা বাসা বাঁধত সেই সব গাছের হালে বড়ই আকাল। তাই জঙ্গলকেই তারা বেশি পছন্দ করছে আজকাল। রাসায়নিক সারের ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে। সঙ্গে রয়েছে কীটনাশকের দাপট। তারা বন্ধু পোকাও মেরে ফেলে। তারই কু-ফল বাবুই পাখির সর্বনাশ ডেকে আনছে । শুধু তাই নয়, উচ্চফলনশীল ধানও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে । উচ্চ ফলনশীল শস্য খেয়ে বাবুইসহ অন্যান্য পাখিরা ক্রমেই প্রজনন ক্ষমতা হারাচ্ছে। তাই গ্রামের চেনা বসত ছেড়ে ঠিকানা বদলে বাবইরা এখন ঘর বাঁধছে লোকালয় থেকে বনাঞ্চলে । বর্ষাকালে তাল-নারকেলের মতো উঁচু গাছ-গাছালিতে ঘর বাঁধতে শুরু করে পুরুষ বাবুই। বিষ থেকে ষাট সেন্টিমিটার সরু লম্বা ঘাস ছিঁড়ে তাদের পোক্ত ঠোঁটে তাল কিংবা সুপারি পাতায় বাবুইরা নিপুন বুননে বাসা বানায় । দুই সপ্তহের বাসা প্রায় সম্পূর্ণ করে পুরুষ বাবুই মন দেয় সাথীর খোঁজে। যার বাসা সর্বাধিক উঁচুতে , পাকাপোক্ত এবং সৌকর্য বাসা তারই জোটে সেরা সঙ্গী। তবে বাসার ভিতরের অর্থাৎ অন্দরমহলের কাজটা করে স্ত্রী-পাখি। বিশেষজ্ঞরা জানান, অনেক সময়েই মিলনের পরে স্ত্রী পাখিটি অবশ্য অন্য পুরুষ পাখির বাসাতে গিয়েও ডিম পাড়ে । দুই থেকে একহালি ডিম দুই সপ্তাহ তা দেয়ার পর ডিম ফুটে আসে নতুন অতিথি । মাত্র ২০ দিনের মধ্যেই উড়তে পারে তারা । কয়েক মাস পর নিজেরাই স্বাবলম্বী হয়ে ছেড়ে উড়ে যায় ছানারা । বছরের বাকী সময়টা তাদের ঠিকানা ঘাস । অনেক সময় তাদের পুরনো পরিত্যক্ত বাড়ি দখল করে নেয় কাঠঠোকরা ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন