স্টাফ রিপোর্টার : মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুলিশ বাহিনীকে জনগণের পুলিশ হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করার নির্দেশ দিয়েছেন । প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়ন এবং পুলিশকে জনগণের প্রথম ভরসার জায়গায় নেওয়ার প্রত্যয় জানিয়েছেন ময়মনসিংহ রেঞ্জের এডিশনাল ডিআইজি ড. মো: আক্কাছ উদ্দিন ভূইয়া । এক সাক্ষাতকারে এডিশনাল ডিআইজি ড. মো: আক্কাছ উদ্দিন ভূইয়া বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের আরও জনবান্ধব হওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, আসলে পুলিশকে জনতারই হতে হবে, জনগণ যেন আস্থা পায়, বিশ্বাস পায় এবং পুলিশের কাছে দাঁড়াতে পারে।
এডিশনাল ডিআইজি ড. মো: আক্কাছ উদ্দিন ভূইয়া বলেন, ময়মনসিংহ রেঞ্জের মাননীয় রেঞ্জ ডিআইজি ব্যারিস্টার হারন-অর রশিদের নির্দেশনায় পুলিশকে মানুষের প্রথম ভরসাস্থল করতে চাই । রেঞ্জে দুর্নীতিমুক্ত সেইসাথে দক্ষ ও মানবিক পুলিশ দেখতে চাই । ময়মনসিংহ রেঞ্জের পুলিশকে প্রযুক্তি নির্ভর, আধুনিক ও স্মার্ট পুলিশ হিসেবে গড়তে চাই।
করোনা ভাইরাস বিস্তার ঠেকাতে চলমান লকডাউন যথাযথভাবে বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন ড. মো: আক্কাছ উদ্দিন ভূইয়া । একান্তই জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষের চলাচল সীমিত করতে হবে,বলেন তিনি।
রেঞ্জের আওতাধীন ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর ও নেত্রকোনা জেলার পুলিশ সুপার ও থানার সকল পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদেরকে জনগণের পাশে থাকার নির্দেশ দিয়ে ড. মো: আক্কাছ উদ্দিন ভূইয়া বলেন, “মানুষের সঙ্গে কোনো ধরনের খারাপ আচরণ করা যাবে না, তাদেরকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা যাবে না। মানুষের সাথে মানবিক আচরণ করতে হবে। প্রত্যেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) নির্দেশ দেয়া হয়েছে, যেকোন মানুষ থানায় সরকারি নাম্বারে ফোন করা মাত্রই তাদেরকে সালাম দিতে হবে । এটা বাধ্যতামূলক ।
ড. মো: আক্কাছ উদ্দিন ভূইয়া বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পুলিশের প্রতি আগে মানুষের যে অনীহা ছিল সেটা এখন আর নেই। বরং পুলিশের প্রতি মানুষের আস্থা ও বিশ^াস বেড়েছে বলেন । আমরাও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে দেখাতে আসলে পুলিশকে জনতারই হতে হবে, জনগণ যেন আস্থা পায়, বিশ^াস পায় এবং পুলিশের কাছে দাঁড়াতে পারে। আমরা মানুষের স্বপ্নের পুলিশ হতে চাই। বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী যেভাবে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, ২০৪১ সালে আমরা যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি, সে উন্নত বাংলাদেশের আমরাই হব উন্নত পুলিশ।
ড. মো: আক্কাছ উদ্দিন ভূইয়া বলেন, মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেছেন, পুলিশ হোক আর সাধারণ মানুষ হোক সকলেই আইনের কাছে সমান। তাই পুলিশের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এবিষয়টি পুলিশের মাথায় রাখতে হবে । মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদকের কুফল সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। মাদককে না বলুন। মাদক শুধু ব্যক্তিকে ধ্বংস করে না, পরিবারকেও ধ্বংস করে দেয়। মাদক সেবনকারি তার পিতা-মাতাকেও হত্যা করে। আর কোন মাদকাসক্ত ঐশি যেন তার পিতা-মাতাকে খুন করতে না পারে, সেলক্ষ্যে মাদকের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহ রেঞ্জ পুলিশ জিরো টলারেন্স ঘোষণা করা হয়েছে জানিয়ে ড. মো: আক্কাছ উদ্দিন ভূইয়া বলেন, মাদকব্যবসায়ী ও মাদকসেবী কাউকেই কোনোরূপ ছাড় দেয়া হবে না। তবে আইন প্রয়োগ করতে গিয়ে অযথা কোনো নিরপরাধ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হয়, সে বিষয়েও রেঞ্জ পুলিশকে সজাগ থাকতে হবে।মাদক সংশ্লিষ্ট ও তদবির বাজদের আইনের আওতায় আনা হবে । ময়মনসিংহ রেঞ্জে মাদক বিক্রি করতে দেয়া হবে না । শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে । এবং গ্রেফতারের আওতায় আনা হবে । ময়মনসিংহ রেঞ্জে ৯৫ ভাগ মাদক কমেছে । রেঞ্জের সকল পুলিশ অফিসারদের কম্পিউটার ও ল্যাবটব পরিচালনায় দক্ষ থাকতে হবে । সেলক্ষ বাস্তবায়নে তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে । আমাদের প্রথম চ্যালেঞ্জ মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির বাস্তবায়ন। আমরা মাদককেও সর্বগ্রাসী হতে দেব না।
পুলিশ বাহিনীকে জনগণের প্রথম ভরসার জায়গায় নেওয়ার প্রত্যয় জানিয়েছেন মাননীয় মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ।
তিনি বলেছেন, দুর্নীতিমুক্ত পুলিশ প্রশাসন গড়ে তুলতে চাই। কোনো পুলিশ সদস্য অবৈধ আয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলে তাকে অবশ্যই বেরিয়ে আসতে হবে। সরকারি ত্রাণ বিতরণ এবং ওএমএসের চাল বিতরণে যে কোনো অনিয়ম রোধে ভূমিকা রাখবে পুলিশ। বর্তমানে পুলিশের অনেক সক্ষমতা রয়েছে। এ সক্ষমতা কাজে লাগাতে হবে। মাননীয় আইজিপির নির্দেশ বাস্তবায়ন করছে ময়মনসিংহ রেঞ্জ পুলিশ বলেন এডিশনাল ডিআইজি ড. মো: আক্কাছ উদ্দিন ভূইয়া ।
ড. মো: আক্কাছ উদ্দিন ভূইয়া বলেন, ময়মনসিংহ রেঞ্জ পুলিশের মাননীয় ডিআইজি ব্যারিস্টার মোঃ হারুন-অর-রশিদ বিপিএম রেঞ্জে যোগদানের পরেই নির্দেশনা দিয়েছেন পুলিশ যেন জনসাধারণের সাথে ভাল আচরন করে । সেলক্ষে কাজ চলছে । মাননীয় ডিআিইজি করোনা ভাইরাসের প্রভাবে রেঞ্জের আওতায় সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় পুলিশকে মাঠপর্যায়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন । এ অবস্থায় রেঞ্জ পুলিশ সদস্যদের সাধারণ মানুষের সঙ্গে বিনয়ী ও পেশাদার আচরণ বজায় রাখার নির্দেশ দেন । জনজীবন সচল রাখতে চিকিৎসা, ওষুধ, নিত্যপণ্য, খাদ্যদ্রব্য, বিদ্যুৎ, ব্যাংকিং ও মোবাইল ফোনসহ আবশ্যক সব জরুরি সেবার সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তি ও যানবাহনের অবাধ চলাচল নিশ্চিত করার আহবান জানিয়ে পুলিশের দায়িত্ব পালনকালে সাধারণ জনগণের সঙ্গে বিনয়ী, সহিষ্ণু ও পেশাদার আচরণ বজায় রাখতে নির্দেশ দেন। মাননীয় ডিআইজির নির্দেশ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা হয়েছে ।
মারনব্যাধী করোনা ভাইরাস আক্রমণে যখন, মানুষ প্রাণের ভয়ে ঘরের মধ্যে বন্ধ থাকছেন। কাজকর্ম নেই । পেটে খিদে নিয়ে ঘরের বারান্দায় বসে রয়েছেন হতাশ হয়ে। ঠিক সেই সময় ময়মনসিংহ রেঞ্জ পুলিশ মানুষের দরজায় এসে দাড়িয়েছেন । অসহায় দুস্থ:দের মুখে খাবার মুখে তুলে দেয়ার জন্য । অসহায়দের বাড়ি বাড়ি গিয়েছেন এখনও যাচ্ছেন । লকডাউন ভেঙে ঘর থেকে বের না হতে নিষেধ করা, কারো যদি ঘরে খাবার না থাকে সাধ্যানুযায়ী তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের সেই সহযোগিতাও দেওয়া হচ্ছে পুলিশের পক্ষ থেকে। এমন পরিস্থিতিতে হাজারো ভূক্তভোগী পরিবারের কাছে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যরা। দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে অসহায় সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করছে পুলিশ সদস্যরা। আর এমন মানবিক আচরণ দিয়েই করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে ভেঙে পড়া মানুষের মন জয় করার কিছুটা প্রয়াস চলছে।
এডিশনাল ডিআইজি ড. মো: আক্কাছ উদ্দিন ভূইয়া বলেন, ময়মনসিংহ রেঞ্জ পুলিশে প্রযুক্তি সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে । প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যুগোপযোগী তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগ, তথ্য ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, প্রযুক্তিগত তদন্ত ব্যবস্থার প্রসার, এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন কার্যক্রম চলছে । এরই ধারাবাহিকতায় ময়মনসিংহ রেঞ্জের আওতায় কোতয়ালী মডেল থানাসহ সকল থানায় গোলঘর তৈরি করা হয়েছে এবং হচ্ছে । এখানে জিডি করতে আসা ব্যক্তিদের কম্পিউটারের মাধ্যমে জিডি গ্রহন করা হবে হাতের ছাপ দিয়ে । জিপিআরএস (জেনারেল প্যাকেট রেডিও সার্ভিস) প্রযুক্তির মাধ্যমে যার তদারকি করবে ময়মনসিংহ রেঞ্জ অফিস ।
পরিশেষে, ময়মনসিংহ রেঞ্জ তথা বিভাগ ও রেঞ্জবাসীর কল্যাণে পুলিশ সদস্যদের নির্ভীক ও নিরলস এই সেবা অব্যাহত রাখতে সকলকে আহবান জানান ড. মো: আক্কাছ উদ্দিন ভূইয়া ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন