পৃষ্ঠাসমূহ

সোমবার, ৩০ আগস্ট, ২০২১

মুক্তাগাছায় মুজাটি দক্ষিণপাড়া সড়ক বেহাল


 স্টাফ রিপোর্টার : ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় উপজেলার মানকোন ইউনিয়নের মুজাটি দক্ষিণপাড়া এলাকায় এক কিলোমিটার সড়ক এলাকাবাসীর দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্ষাকালে সড়কে বৃষ্টির পানি জমে এমনভাবে কাদার সৃষ্টি হয় দেখে মনে হবে চাষাবাদের ক্ষেত।

সড়কটি সংস্কারের জন্য এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, এমপির কাছে দাবি জানিয়ে এলেও কেউ তাদের দাবির প্রতি ভ্রুক্ষেপ করছে না। আর সড়কে চলাচল করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় অনেক পথচারীর হাত-পা ভেঙে পঙ্গু হচ্ছে।

এলাকার স্থানীয়রা জানান, সড়কটি পাকাকরণ করে দিবে বলে কথা দিয়েছিলেন বর্তমান এমপি সাবেক এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ। কিন্তু তার পরও কেন এ সড়ক সংস্কার হচ্ছে না তা কারো জানা নেই।

সড়কটিতে চলতে গিয়ে প্রতিদিন নাকাল হতে হচ্ছে হাতপাকিয়া, শ্রীপুর, গোপালপুর, ফুসকিরবাজারসহ কয়েক গ্রামের কৃষক , শ্রমিক , পেশাদার ও সাধারণ মানুষ। আবার সামান্য বৃষ্টি হলেই খানাখন্দে ভরা সড়ক পানি জমে যায়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন চলাচলরত সাধারণ মানুষ ও স্কুল কলেজে যাওয়া আশা শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি বেহাল এই সড়কে প্রায়ই স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা চলাচলের সময় খানা-খন্দে পড়ে তাদের জামা-কাপড় নষ্ট করছে। গত দিনের টানা বর্ষণে এই ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে।

এলাকার কৃতি সন্তান মুক্তাগাছা মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষক জানান, ভাঙা এ সড়কে প্রতিদিন আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। পথচারীদের দুর্ভোগের পাশাপাশি আমাদের ভোগান্তি হচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্যে। আরও বলেন, এই সড়কটি খুব দ্রুত বাস্তবায়ন করা হোক, তার জন্য আমরা মুক্তাগাছার এমপি ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ বাবুর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।


স্থানীয় বাাসিন্দা পৌরসভার কর্মচারি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মকবুল বলেন, আমাদের এ গ্রামের বেহাল সড়কে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি হয় রোগীদের। বিশেষ করে অ্যাম্বুলেন্সে যেসব রোগী আসেন তাদের যন্ত্রণা অনেকাংশে বাড়িয়ে তোলে। কাচা বেহাল সড়কে সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয় অন্তসত্ত্বা নারীদের। কারণ, জরুরি মুহূর্তে অথবা গুরুতর অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্সে বা কোন সিএনজি করে তাদের হাসপাতালে আনতে হয়। সে সময়ে কোন অ্যাম্বুলেন্স বা সিএনজি ঢোকানো যায় না। এছাড়া অন্য রোগীদেরও দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

কয়েকজন স্কুল শিক্ষক বলেন, প্রতিদিন আমাদের এই সড়ক দিয়ে কলেজে যাতায়াত করতে হয়। আসা-যাওয়ার সময় যখনই এই পথটুকুর কথা মনে পড়ে, তখনই মনটা খারাপ হয়ে যায়। বিরক্তি আর তিক্ত অভিজ্ঞতা এখানে আমাদের। ইউপি চেয়ারম্যান যদি সাময়িকভাবে ইটের খোয়া-বালু ফেলে সংস্কার করায় আপাতত কিছুটা ভোগান্তি কমত ।

সরেজমিনে দেখা যায়, মুক্তাগাছা - মানকোন ইউনিয়নের মুজাটি দক্ষিণপাড়া এই সড়কটি সংশ্লিষ্ট উপরোক্ত গ্রামের লোকজন নির্ভরশীল। এলাকার লোকজন এ সড়ক দিয়েই যাতায়াত করছেন। শুধু তাই নয় ওই এলাকার স্কুল-কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রীরাও এ সড়কের ওপর নিভর্রশীল। সর্বোপরি এলাকার কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ধান-পাটসহ অন্যান্য পণ্য বাজারজাত করতে এ সড়ক দিয়েই বিভিন্ন স্থানে প্রেরণ করতে হয়। এ ছাড়া বিকল্প কোন রাস্তা নেই। ফলে কৃষকরা ধানসহ অন্যান্য পণ্য বাজারজাত করতে মারাত্মক অসুবিধায় পড়ছে।

চলতি বর্ষা মৌসূমে সড়কটির এমন অবস্থা হয়েছে যে, যানবাহন তো দূরের কথা পায়ে হেঁটেই চলাচল করা অসম্ভব। কাদার গর্তে পিছলে পড়ে প্রায়ই পথচারীরা হাত-পা ভাঙ্গাসহ মারাত্মক আঘাত পেয়ে থাকেন। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও এলাকাবাসির ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা এ সড়কের ওপর নিভর্রশীল বিপুল জনগোষ্ঠীর দুর্দশা লাঘবে কোন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। এমতাবস্থায় সড়কটি পাকা করে এলাকাবাসীর ভোগান্তি দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ আবশ্যক।

মুক্তাগাছা উপজেলা প্রকৌশলী অসিত বরণ দেব জানান, রাস্তাটি সংস্কারের জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি । অনুমোদন হলেই কাজ শুরু করা হবে । 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন