photo

সোমবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

মুক্তাগাছায় পান সুপারি সংস্কৃতি

 

মনোনেশ দাস , মুক্তাগাছা : পান সুপারির প্রচলন এদেশে খুবই প্রাচীন কালের । শুধু বাংলাদেশ নয় ভারত বর্ষব্যাপী পান সুপারির প্রচলন একেক অঞ্চলের সংস্কৃতিকে ঘিরে ভিন্ন ভিন্ন মাত্রায় রুপ পায় । পরিবারের চাহিদা মেটাতে আঙ্গিনায় সুপারি গাছ, সেই গাছ পেচিয়ে গাছ পানের বাহার এখনও গ্রাম বাংলার ২/১ স্থানে দেখা যায় । এক সময় এমনটি ছিল সমগ্র বাংলাদেশের চিত্র ।

অতিথি আপ্যায়নে বিয়ের আসরে এমনকি দেবীর অর্চনাতেও পান সুপারির ব্যবহার এ অঞ্চলের পরম্পরাগত বিষয় । লোক কাহিনীতে রাধা তাম্বুল চিবিয়ে লাল ঠোটে কানুর মনোহরণ করেছিলো । লক্ষèীন্দরের বাসর ঘরে বেহুলার পানের পিকে লাল হলুদের বাহার এনেছিল । গ্রাম বাংলায় বিয়াইন সুগন্ধি পান খাইয়ে বিয়াইর মন জয় করে । তাই বাংলার লোকাচারে পান সুপারি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।
কিছু মানুষ নিয়মিত পান খায় ; তামাক বিরির মত এটিও তাদের নেশার বিষয় । এমন লোকের সংখ্যা ভারতবর্ষ জুড়েই খবুই নগন্য নয় । তাই পান সুপারি শিল্পটি বিভিন্ন স্থানে বাণিজ্যিকভাবে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে গুরুত্ব পায় । অঞ্চল ভিত্তিক বেনারসী পান ,শাহী পান , আগবরী পান ,নূরানী পান ইত্যাদি নামকরনে বিশেষ সুগন্ধি ভেষজ দিয়ে তৈরী করা হয়।
পানের জন্য প্রসিদ্ধ মুক্তাগাছা উপজেলার নূরানী পান উল্লেখযোগ্য । এই পানের একমাত্র প্রস্তুতকারী মরহুম নূর হোসেন আনসারী । বর্তমানে পরিচালনা করছেন তার পুত্র মাহতাব আনছারী । শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অর্ধ শতাব্দীরও বেশী দিন যাবৎ তার এ দোকান প্রসিদ্ধ ।
এলাকায় পান খোর সমজদার গণ জানান , তার হাতে পান না খেলে তাদের মন জুড়ায় না । দূর থেকে হেটে এসেও আনসারীর নূরানী পান খেয়ে যায় প্রতিদিন অনেক সমজদার । তার বাহারী পানে জর্দা , লং , এলাচী ,দারচিনি ,জায়ফল ,জৈত্রিক , এবং নিজের তৈরী বিভিন্ন মসল্লার সমাহার ঘটিয়ে নূরানী পান , শাহী পান ,আগবরী পান , বেনারসী পান তৈরী করেন । ঢাকা থেকে সরাসরি লোক পাঠিয়ে অনেক সৌখিন লোক নূরানী পান নিয়ে যান ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন