photo

বুধবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৬

মুক্তাগাছায় বাসন্তি পূজা


মনোনেশ দাস : ময়মনসিংহে মুক্তাগাছায় মহারাজা রোডস্থ রাধা গোবিন্দ মন্দির প্রাঙ্গণে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও শ্রীশ্রী বাসন্তি পূজা ১২ এপ্রিল মঙ্গলবার থেকে ১৬ এপ্রিল শনিবার পর্যন্ত বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্টানমালার মধ্যে ১২ এপ্রিল মঙ্গলবার মহাষষ্ঠী পূজা ও অধিবাস। ১৩ এপ্রিল বুধবার মহাসপ্তমী পূজা। ১৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার মহাঅষ্টমী পূজা। ১৫ এপ্রিল শুক্রবার মহানবমী পূজা। ১৬ এপ্রিল শনিবার মহাদশমী পূজা ও রাত ১০টার দিকে বাসন্তী দেবীর বিসর্জন। পূজার প্রতিদিনই সন্ধ্যা আরতি, আনন্দ কীর্ত্তনসহ রয়েছে বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদি। জানা যায়, যা চণ্ডী মধুকৈটভাদি দৈত্যদলনী যা মহিষোন্মুলিনী যা ধূম্রক্ষণচণ্ড মুগুমথনী যা রক্তবীজাশনী। শক্তিঃ শুম্ভনিশুম্ভ দৈত্যদলনী যা সিদ্ধিদাত্রী পরা সা দেবী নবকোটী মূর্তি সহিতা মাং পাতু বিশ্বেশ্বরী।। যে চণ্ডিকা মধুকৈটভাদি-দৈত্য নাশিনী, যিনি মহিষাশুর- মর্দিনী , যিনি ধূম্রলোচন চণ্ড মুন্ডাশুর সংহারিণী, যিনি রক্তবীজ ভক্ষয়িত্রী , যে মহাশক্তি শুম্ভনিশুম্ভাসুর বিনাশিনী ও শ্রেষ্ঠা সিদ্ধিদাত্রী এবং নবকোটী সহচরি পরিবৃতা, সেই জগদিশ্বরী দেবী আমাকে পালন করুন হিন্দুদের দেব-দেবীর মধ্যে জনপ্রিয়তার বিচারে অগ্রগণ্য সম্ভবত শিব ও দুর্গা। দুর্গা পুজা হিন্দুদের জাতীয় উৎসব। প্রকৃতির সবচেয়ে সুন্দর ঋতু শরৎকাল। এই শরৎকালেই মায়ের আগমন। তাই তো দুর্গার আরেক নাম আগমনি। শরৎকালে প্রকৃতি অপরূপ সাজে সেজে ওঠে। শেফালি ফুলের গন্ধে, কাশফুলের সুস্নিগ্ধ লাবণ্যে আকাশে বাতাসে রচিত হয় এক আনন্দময় পরিবেশের মধুর আগমনি বার্তা। পুরানে বিবৃত, গিরিরাজ হিমালয় ও মেনকার কন্যা দুর্গা। দেবাদিদেব মহাদেব দুর্গার স্বামী। সত্যযুগে রাজা সুরথ রাজ্য উদ্ধারের জন্য বসন্তকালে দেবী দুর্গার পূজা করেছিলেন। এই পূজা বাসন্তি পূজা নামে জনাজাত। ত্রেতা যুগের শ্রী রামচন্দ্র রাবণ বধের জন্য অকালে দেবীর পূজা করেছিলেন। সেই জন্য শ্রী রামচন্দ্রা প্রবর্তিত দুর্গাপূজাকে অকালবোধন বলা হয়। দুর্গা হল শক্তির পূজার উৎস। দেবী দুর্গা কন্যা রূপে ও মাতা রূপে সকলের কাছে পূজিতা। দেবী দুর্গার আগমন যেমন আনন্দের, আবার বিজয়া বেদনায় ভরা। মায়ের বিসর্জনে আমরা অশ্রু ভরা নয়নে বলি মা আবার এসো। দেবী দুর্গা সর্বস্বরূপা। দুর্গা শব্দ জীবের ১১ টি পাপ ও দুঃখ নাশ করে। তাই তিনি দুর্গা। দুর্গা দুর্গা যেই জন বলে একবার নিশ্চয় চলিয়া যায় দুঃখ তাহার। অসুর বিনাশের জন্য দেবী দুর্গার আবির্ভাব হয়েছিল। ইন্দ্র বরুণ আদি দেবতা, নানা অস্ত্র শস্ত্র ও নানারূপ অলঙ্কারাদি দিয়ে মাকে শক্তিরূপা করে সাজিয়ে তুলেছিলেন। তখন মায়ের চণ্ডী রূপ। দেবীর বাহন সিংহ। চণ্ডী রূপে ভগবতী, মধুকৈটভ মহিষাশুর শুম্ভনিশুম্ভ অসুরদের বধ করেছিলেন। জগতে শান্তি ও দেব রাজ্য প্রতিষ্ঠা করলেন। রামায়নের যুগে, শ্রীরামচন্দ্র রাবণ বধের জন্য শক্তি প্রার্থনা করে দেবী দুর্গার অকালে পূজা করেছিলেন। সেই দুর্গা পূজার ধারা একালেও অব্যাহত রয়েছে। আজও আমরা সমান তালে পালন করে চলেছি এই উৎসব।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন