
স্টাফ রিপোর্টার : দেশে আরোও ৬টি নতুন যাদুঘর তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের। তবে অর্থ ও জনবলের অভাব চরম সংকট দেখা দিয়েছে সংস্থাটিতে। সাতক্ষীরা, বরিশাল, রাজশাহীর বাঘা, পটুয়াখালীর কুয়াকাটা, চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার গৌড়ে এবং মুন্সিগঞ্জের ইন্দ্রাকপুরে জাদুঘর নির্মাণ করা হচ্ছে।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর এই যাদুঘর নির্মাণ করছে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে চলতি অর্থবছরে রাজশাহীর বাঘা ও মুন্সিগঞ্জের ইন্দ্রাকপুরের যাদুঘর চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে তবে অন্যান্য চারটির কাজ দ্রুত এগিয়ে নেওয়া হবে যথাযথ অর্থ বরাদ্দ পেলে।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের রাজস্ব ও সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত ১০০ কোটি টাকা দিয়ে কাজগুলো সম্পূর্ণ হচ্ছে। তবে অধিদফতরের হাতে নেওয়া কর্মসূচির তুলনায় টাকার পরিমাণ কম। এছাড়া সারা দেশে এই অধিদফতরের জন্য জনবল মাত্র ৩৪০ জন।
কিন্তু সরকার কর্তৃক অনুমোদিত ৪৪৫ জন। এখনও ১০৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। প্রাথমিকভাবে মোবাইল এ্যাপ্লিকেশনে প্রকাশের লক্ষ্যে ৫০টি সংরক্ষিত প্রত্নস্থানের তথ্য, আলোকচিত্র, ভিডিও, চিত্র এবং ১৬টি জাদুঘরের আলোকচিত্র ভিডিও চিত্র ও সংরক্ষিপ্ত বিবরণ প্রেরণের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী পরিচালক(উৎকীর্ণলিপি ও মুদ্রা)আফরোজা খান মিতা বলেন, দেশে আরো ৬টি নতুন যাদুঘর তৈরি হচ্ছে। দুটির কাজ প্রায় শেষের পথে আরও চারটি তৈরির করা হবে। তবে আমাদের পরিকল্পনা বেশি থাকলেও অর্থের অভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এর পাশাপাশি প্রবল জনবল সংকটও রয়েছে। কারণ নতুন নতুন যাদুঘর তৈরি করলেই হবে না, এগুলোতে ব্যবস্থাপনা ও ভালো রাজস্ব পেতে হলে জনবল খুবই দরকার।
এছাড়া সারা দেশে ৪৪৮টি প্রত্নস্থাপনকে সংরক্ষিত করা হয়েছে এবং ১৭টি মিউজিয়াম আছে যেখান থেকে আমরা রাজস্ব পেয়ে থাকি । কিন্তু জনবলের অভাবে এগুলোর সঠিক ব্যবস্থাপনা হচ্ছে না।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরে যাচ্ছে ৬টি নতুন পরিকল্পনা: অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে আরো ৬টি নতুন পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে প্রকাশনা, জরিপ ও অনুসন্ধান, সংস্কার সংরক্ষণ ও উন্নয়ন, প্রদর্শনী উন্নয়ন, সংগ্রহ বৃদ্ধি ও আধুনিকায়ন এবং মিউজিয়ামের কাজ। কিন্তু অর্থের অভাবে এই কাজসমূহ সঠিকভাবে সম্পূর্ণ করা হচ্ছে না।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর থেকে জানা গেছে, প্রকাশনার কাজ সম্পূর্ণ করতে যে পরিমাণ অর্থের দরকার তা নেই অধিদফতরটির। এছাড়া নতুন নতুন স্থাপত্য ও প্রাচীন নির্দশন খূঁজে পাওয়ার লক্ষ্যে খনন কাজ করে থাকে অধিদফতরটি। কিন্তু অর্থের অভাবে অনেক সময় মাঝপথে থেমে যায় কাজ।
খনন কাজ: বর্তমানে অধিদফতরের আওতায় ৪টি আঞ্চলিক পরিচালক দফতরের পরিচালনায়, কুমিল্লা, গাজীপুর, নওগাঁ ও খুলনায় প্রত্নতাত্ত্বিক খনন পরিচালিত হচ্ছে। আগামী পাঁচ বছরে উল্লেখিত স্থান সমূহে খননে প্রাপ্ত অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধির দরকার। এছাড়া বিস্তৃত খননস্থল সমূহকে খননের মাধ্যমে প্রাপ্ত নতুন খননস্থল ও নির্দশনসমূহের ডকুমেন্টেশন করা এবং খননস্থলে সমূহকে প্রর্দশনযোগ্য করে উপস্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে অধিদফতরের।
ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন পুরাকীর্তি সমূহের সংস্কার-সংরক্ষণ ও উন্নয়ন কর্মসূচি: অধিদফতরের প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর ২০১২-১৪ অর্থবছরে ঢাকা বিভাগে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় জমিদার বাড়ি, ধানমণ্ডি প্রাচীন ঈদগাহ, মোহাম্মদপুর সাত গম্বুজ মসজিদ, মুন্সিগঞ্জে ইদ্রাকপুর দূর্গ, মানিকগঞ্জের বালিয়াটি প্রসাদ, লালবাগ খান মৃধা মসজিদ ও নবাবগঞ্জ খোলারাম দাতার মন্দির প্রমূখ প্রত্নস্থলের কাজ বাস্তবায়িত হচ্ছে।
বরিশাল পুরাতন কালেক্টর ভবন সংস্কার-সংরক্ষণ: প্রত্নতত্ত বিভাগ বরিশালের পুরাতন কালেক্টর ভবন সংস্কার-সংরক্ষণ ও জাদুঘরের কাজ হাতে নিয়েছে অধিদফতর। এর মধ্যে অন্যতম বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার মাহেলার মাঠ, কমলাপুর মসজিদ ও কসবা মসজিদ প্রত্নস্থলের সংস্কার কাজ চলছে।
বরিশাল পুরাতন কালেক্টর ভবন জাদুঘর তৈরির লক্ষ্যে মূল ভবনের সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে। জাদুঘর উপস্থাপনার জন্য শোকেস তৈরি, বিদ্যুতায়ন, আসবাবপত্রসহ প্রত্ন সামগ্রীর কাজ চলমান রয়েছে। ২০১২-১৪ অর্থবছরের মধ্যে কাজগুলো শেষ হবে বলে অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন