মনোনেশ দাস : ময়মনসিংহে জল্লাদ । মানুষ আমাদেরকে সম্বোধন করেন জল্লাদ বলে । তাতে আমাদের দু:খ নেই । অভিমান করে পেশা ছেড়ে দিলে মানুষকেই কামড় খেয়ে যন্ত্রণা ভোগ করকে হবে এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। মুচকি হেসে কথাগুলো বললেন ময়মনসিংহ শহরের কৃষ্টপুরের আব্দুল বারেক (৬৮) এবং মুক্তাগাছা উপজেলার রঘুনাথপুরের বাসিন্দা আব্দুল খালেক (৪৮) । এই দুই ব্যক্তি ময়মনসিংহ পৌরসভার ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী । এখন তারা পেশাদার জল্লাদ । ময়মনসিংহ পৌরসভা এবং জেলার অন্যান্য উপজেলাগুলির পৌরসভা এলাকায় বেওয়ারিশ কুকুর বেড়ে গেলে নিধনের জন্য ডাক পড়ে এই জল্লাদদের । কুকুর নিধনের কারণেই মানুষ তাদের জল্লাদ বলে সম্বোধন করে থাকে । আমাদের দেশে মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত মানুষকে যারা ফাঁসিতে ঝুলান তাদেরকই জল্লাদ বলা হয় । কিন্তু তারা হত্যা করেন কুকুর । তাও আবার ফাঁসিতে ঝুলিয়ে নয় বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে কুকুরের গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে । বারেক জানান , শুধু ময়মনসিংহেই নয় মধ্যপ্রাচ্যে গিয়ে সেখানেও তিনি এ পেশায় নিয়োজিত ছিলেন । এ পর্যন্ত লক্ষাধিক কুকুর তার হাতে প্রাণ হারিয়েছে । এ পেশা কেমন লাগে প্রশ্ন করা হলে তারা জানান , ভালো লাগে না ।জীবন ও জীবিকার তাগিদে এ পেশায় বেছে নিতে হয়েছে । যন্ত্র দিয়ে যখন কুকুরের গলা চেপে ধরা হয় তখন তারা করুণ আর্তিতে চিৎকার করে । আবার যখন অনেকে বলেন , পশু হত্যা করতে হয় জবাই করে অথবা বলি দিয়ে । কিন্তু আমরা তো হত্যা করি শ্বাসরোধ করে । তারা প্রশ্ন করে বলেন , আমরা তো জল্লাদও না কসাইও না । তাহলে আমরা কি? আমরা আমাদের পেশার অন্য নামকরণ চাই ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন