photo

সোমবার, ১১ মার্চ, ২০১৯

ময়মনসিংহে এখন আর.ও.পি.-র চিকিৎসা হচ্ছে


স্টাফ রিপোর্টার : ময়মনসিংহে এখন আর.ও.পি.-র চিকিৎসা হচ্ছে। ROP চিকিৎসার ক্ষেত্রে এটা এক বিশাল সুখবর। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী বলেন, এই কর্মসূচীর উদ্বোধন করবার জন্য গত মার্চ মাসে আমি আমন্ত্রিত হয়েছিলাম আর.ও.পি. বিশেষজ্ঞ হিসেবে। নিজের মেডিকেল কলেজে প্রত্যাবর্তন করে বিশেষজ্ঞ হিসেবে একটি নতুন চিকিৎসা সেবার উদ্বোধন করতে পারা ছিল আমার জন্য অত্যন্ত গর্বের ও আনন্দের ঘটনা। এই সম্মানের অংশীদার করার জন্য আমি বি.এন.এস.বি(BNSB)-র রেটিনা বিশেষজ্ঞ আমার মেডিকেলের ছোট ভাই ডাঃ কৃপাধন চক্রবর্তী, ডাঃ কে.জামান বি.এন.এস.বি(BNSB)-র শরীফুজ্জামান পরাগ ভাই এবং অরবিস, বাংলাদেশের কাছে কৃতজ্ঞ। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডাঃ আনোয়ার হোসেন। নবজাতকের রেটিনার ভয়াবহ রোগ Retinopathy of Prematurity বা আর.ও.পি. (ROP)- চিকিৎসার ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত একটি প্রধান প্রতিবন্ধকতা হল, চিকিৎসা মূলত ঢাকা কেন্দ্রিক। যেহেতু চিকিৎসার সফলতার ক্ষেত্রে সময়ের একটি সীমা আছে, শিশুগুলো যখন ঢাকায় আমাদের মত ROP Specialist–দের কাছে এসে পৌঁছে, তখন খুব দেরী হয়ে যায়। শিশুটি অন্ধ হয়ে গেছে, প্রায়শই এমন দেখি আমরা। কিছু আর করার থাকে না। তাই আর.ও.পি.-র চিকিৎসা-সেবা বিকেন্দ্রীকরণ এখন অত্যাবশ্যকীয়। সেই প্রেক্ষাপটে ময়মনসিংহে এই কার্যক্রম শুরু একটি অত্যন্ত সুখবর। ময়মনসিংহের ২ কোটি জনগণের এই সেবার জন্য কষ্ট করে আর ঢাকায় আসার প্রয়োজন নাই। ময়মনসিংহের Dr. K. Zaman BNSB এবং NICU, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মধ্যে MOU স্বাক্ষরিত হওয়ায়, Orbis, Bangladesh- এর সহায়তায় ডাঃ কৃপা দুই হাসপাতালেই ROP Screening ও চিকিৎসা দেয়া শুরু করেছেন। প্রতি মঙ্গলবার NICU, MMC এবং প্রতি রবিবার Dr. K. Zaman BNSB Eye Hospital- এ ROP Screening হচ্ছে। এভাবে ROP সেবা ছড়িয়ে পরবে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এবং বাংলাদেশের কোন নবজাতক ROP-র মত প্রতিরোধযোগ্য অকারণ অন্ধত্বের অসহায় শিকার হবে না – সর্বান্তকরণে এই কামনা করি। জান্নাতুল বাকেয়া কেকা বলেন, সময়ের আগে অল্প ওজন নিয়ে জন্ম নেয়া, বিশ্বের ২০ থেকে ৪০ শতাংশ নবজাতক চোখের রেটিনার রক্তনালির সমস্যা ‘আরওপিতে’ ভুগছে। জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে সময়ের আগে অল্প ওজন নিয়ে জন্ম নেয়া নবজাতকদের ২৯ থেকে ৩৫ শতাংশ আরওপি আক্রান্ত। তাদের ৭ থেকে ৮ ভাগের জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। দশ মাস বয়সী তুবা চোখের চিকিৎসা শেষে মায়ের কোলে হাসি মুখে বাড়ি ফিরছে। তার মতো, চোখের রেটিনার রক্তনালি বা আরওপি’র সমস্যায় আক্রান্ত শিশু ও নবজাতকদের নিয়ে দিশেহারা অনেক পরিবার। চক্ষু চিকিৎসকরা বলছেন, নির্ধারিত সময়ের আগে ও ন্যুনতম আড়াই কেজির কম ওজন নিয়ে জন্ম নেয়া নবজাতকরা চোখের রেটিনার রক্তনালির সমস্যা বা আরওপি’র ঝুঁকিতে থাকে। জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের জরিপ বলছে, সময়ের আগে জন্ম নেয়া, অল্প ওজনের নবজাতকদের ২৯ থেকে ৩৫ ভাগ ‘আরওপি’তে আক্রান্ত। এদের মধ্যে ৭ থেকে ৮ ভাগের চিকিৎসা জরুরি। জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল ২০১৩ সাল থেকে সপ্তাহে একদিন ঢাকা শিশু হাসপাতালে বিনামূল্যে ‘আরওপি’ সনাক্ত করা ও চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। চক্ষু বিশেজ্ঞরা বলছেন, ‘ভিটামিন এ’জনিত অন্ধত্ব দূর করার ক্ষেত্রে সফল বাংলাদেশ। কিন্তু সময় মতো ‘আরওপি’ সনাক্ত না করা হলে বিপুল সংখ্যক শিশু এ কারণে অন্ধত্বে আক্রান্ত হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন তারা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন