photo

বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ, ২০১৯

মুক্তাগাছায় কমছে শিমুল গাছ


মনোনেশ দাস : একদা মুক্তাগাছার সর্বত্র প্রচুর শিমুল গাছ দেখা গেলেও এখন তেমন নেই। বসন্ত মাস চলছে। বসন্ত এলেই মনে পড়ে শিমুল গাছের কথা। শিমুল ফুল না ফুটলে বসন্তই মনে হয়না। অথচ কালের আবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় শিমুল গাছ। সেই সঙ্গে হারিয়ে যাচ্ছে মনোমুগ্ধকর শিমুল ফুল। অথচ দেড় দুই যুগ আগেও মুক্তাগাছার সর্বত্র আনাচে-কানাচে রাস্তার পাশে চোখে পড়ত অসংখ্য শিমুল গাছ। আর এ সব গাছে ফুটন্ত শিমুল ফুলের সমারোহই জানিয়ে দিত এই বুঝি বসন্ত এলো। প্রস্ফুটিত ফুলে পুরো এলাকা এক অপরূপ রূপে সজ্জিত হয়ে উঠত। যা ছিল সত্যিই মনোমুগ্ধকর। মুক্তাগাছা অঞ্চলের প্রবীণরা বলেন, উন্নয়নের নামে যেভাবে নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন চলছে তাতে দেশীয় বহু গাছেরই আর অস্তিত্ব নেই। শিমুল-পলাশের মত গাছগুলি এখন শুধু বইয়ের পাতায় আর মানুষের স্মৃতিতে বেঁচে আছে। তবে শুধু সৌন্দর্যই নয়, প্রাকৃতিক ভাবে গজিয়ে ওঠা শিমুল গাছ থেকে পাওয়া তুলা দিয়ে লেপ, তোষক, বালিশ ইত্যাদি তৈরি করা যায়। যার ব্যবহার খুবই আরামদায়ক এবং স্বাস্থ্য সম্মত। ফলে একসময় এই সব শিমুল তুলা বাজারে বিক্রি করলে সংসারে কিছুটা হলেও অর্থের যোগান হত গরীব মানুষের। পাশাপাশি নিজেদের লেপ, তোষক, বালিশের চাহিদা মিটত। এছাড়া শিমুল গাছ অনেক রোগ প্রতিরোধের ওষুধি গাছ হিসেবে গ্রাম অঞ্চলে ও হারবাল ব্যবসায়ীদের কাছে সুপরিচিত। শিমুলের মূল বিভিন্ন রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। উপজেলার ধুনকররা (লেপ- তোষকের কারিগর)জানান, দিন দিন শিমুল গাছ কমে যাওয়ায় শীতের মৌসুমে দেশী তুলা খুঁজে পাওয়া দুরূহ হয়ে পড়ে। ফলে একযুগ আগে প্রতি কেজি শিমুলের তুলা বিক্রি করা হতো অর্ধশত টাকারও কমে । বর্তমানে এতুলা বিক্রি হচ্ছে ৫/ ৭ শ’ টাকা কেজি দরে । উপজেলার প্রবীণ কাঠ ব্যবসায়ী শওকত জানান, প্রযুক্তির সঙ্গে সঙ্গে শিমুল গাছের দাম কম হওয়ায় বিদেশী বিভিন্ন প্রজাতির গাছের প্রতি মানুষ ঝুঁকে পড়ায় শিমুল গাছসহ বিভিন্ন দেশীয় গাছ পর্যায়ক্রমে এই এলাকা থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন সড়ক মহাসড়ক সম্প্রসারণ করার সময় সড়কের পাশে শিমুলসহ প্রাচীন অনেক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে । গাছ কেটে ফেলার কারণে বাসস্থান হারিয়েছে পাখিরা। সরকারি উদ্যোগে নতুন করে শিমুল গাছ রোপন করার দাবি উপজেলাবাসীর ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন