পৃষ্ঠাসমূহ

সোমবার, ৬ জুলাই, ২০২০

মুক্তাগাছায় রাস্তা নির্মাণে বাঁধায় বন্ধ


স্টাফ রিপোর্টার : মুক্তাগাছায় জমিদারদের রেখে যাওয়া দেড়শ বছরের পুরনো সরু রাস্তা। এ রাস্তাটি ঘিরেই গড়ে উঠেছে আবাসিক এলাকা। অর্ধ শতাধিক পরিবারের লোকজন একমাত্র এ রাস্তার দিয়েই চলাচল করে থাকে। সামান্য বৃষ্টিতেই ওই রাস্তায় হাঁটু পানি জমে চলাচলের অযোগ্য হয়ে চরম ভোগান্তি বাড়ায় এলাকাবাসীর। এ নিয়ে এলাকাবাসী রাস্তাটি সংস্কারের দাবিতে বছরের পর বছর পৌরভার কাছে লিখিত আবেদন জানিয়ে আসছিলেন । অবশেষে মুক্তাগাছা পৌরসভা রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ নিলে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম রঞ্জু। ফলে কাজ শুরু হওয়ার ৫/৬ দিন পরই ঠিকাদার বাধ্য হয়ে কাজ বন্ধ করে দেন। ফলে রাস্তাটি সংস্কার কাজে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে । মুক্তাগাছা পৌরসভার সামনে ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পার্শ্বে থেকে আকন্দ অয়েল মিল ও কালামিয়া হোটেলের মাঝ দিয়ে প্রায় ৫শ’ মিটারের এ রাস্তাটি প্রবুদ মাস্টারের বাড়ি পর্যন্ত চলে গেছে। পৌরসভার জন্মলগ্ন থেকে এ রাস্তা দিয়ে মানুষ চলাচল করে আসছিল। যুগে যুগে এ রাস্তাকে ঘিরেই ওই এলাকায় অর্ধশতাধিক পরিবারের সমন্বয়ে গড়ে উঠে আবাসিক এলাকা। এলাকাবাসীর দাবির মুখে এক সময় রাস্তাটি পাকা করণের ব্যবস্থা নেয় স্থানীয় পৌরসভা। তখন এলাকার প্রভাবশালী ব্যবসায়ী মরহুম জহির উদ্দিন আকন্দের পরিবারের লোকজনের বাধার কারণে অর্ধেক কাজ করার পর আর বাকিটুকু করা সম্ভব হয়নি। বছরের পর বছর ধরে এভাবেই পড়ে থাকে বাকি অংশটুকু। এক সময় সেটুকুও ভেঙে নষ্ট হয়ে যায়। এতে সামান্য বৃষ্টি হলেই হাঁটু পানি জমে থাকে ওই অংশে। ময়লাযুক্ত পানি ও দুর্গন্ধ চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়ে এলাকাবাসীর। দীর্ঘদিন পর এলাকাবাসী দাবির মুখে আবারো উদ্যোগ নেয় মুক্তাগাছা পৌরসভা। পাকা ড্রেন নির্মাণ করে তার ওপর স্লেপ বসিয়ে রাস্তা করার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। সে মোতাবেক পৌরসভা কর্তৃপক্ষ টেন্ডারের মাধ্যমে রাস্তার ড্রেন ও পাকা করণের কাজ শুরু করে। এ সময় জহির উদ্দিন আকন্দের ছেলে নজরুল ইসলাম রঞ্জু রাস্তার জমি তার নিজের দাবি করে চলমান রাস্তার কাজ বন্ধ দেয়। এলাকার বাসিন্দারা বলেন, কালামিয়া হোটেল সংলগ্ন রাস্তাটি জমিদার আমলের। এ রাস্তা দিয়েই ওই এলাকার বাসিন্দারা যুগ যুগ ধরে চলাচল করে আসছিল। এলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির মুখে পৌরসভা রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। হঠাৎ ওই এলাকার ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম রঞ্জুর বাঁধার কারণে রাস্তার কাজ বন্ধ হয়ে পড়েছে। এতে তারা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। এ জন্য তিনি পৌরসভার মেয়রকেও দায়ি করেন। আরেক বাসিন্দা ফারুক আহম্মদ বলেন, তারা শুধু রাস্তা তৈরীতেই বাধা দিচ্ছে না ইতোপূর্বে বিআরএস তৈরীর সময় তাদের জমির পেছনে সরকারের ১নং ভিপি খতিয়ানের জেএল নং ৮৬, দাগ নং ১৪ মৌজা ঈশ্বর গ্রামে পৌঁনে চার শতাংশ ডোবা জমিও তাদের নামে বিএরএস ভূক্ত করে নিয়েছে। তারা সেই ডোবা জমি মাটি ভরাট করে রাস্তার উপর আধা পাকা ভবন তৈরী করেছেন। রাস্তার জমি নিজের দাবি করে ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম রঞ্জু সাংবাদিকদের বলেন, বিরোধপূর্ণ জমি তাদের কেনা সম্পত্তি। তাদের সাথে কোনো প্রকার আলোচনা না করেই রাস্তার কাজ শুরু করা হয়েছে । এ কারণে কাজে বাধা দেওয়া হয়েছে। শর্ত সাপেক্ষে মানুষের চলাচলের জন্য রাস্তাটি ছেড়ে দেওয়া হবে। সংস্কার কাজে বাধার বিষয়টি স্বীকার করে পৌরসভার মেয়র শহিদুল ইসলাম শহীদ বলেন, রাস্তার জমির মালিকানা বিরোধে সংস্কার কাজ আপাতত বন্ধ রয়েছে। এলাকাবাসী ও জমির দাবিদারের সাথে আলোচনা করে দুই এক দিনের মধ্যেই রাস্তার কাজ আবার শুরু করা হবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন