মনোনেশ দাস, বড়শি দিয়ে মাছ শিকারের প্রধান উপকরণ ছিপ তৈরি করে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার একটি গ্রামের অনেক পরিবার এখন স্বাবলম্বী।
কারিগর নারী- পুরুষরা চাষাবাদ, পশুপালন, গৃহস্থালী কাজ এবং শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি ছিপ তৈরির কাজ করে তাদের সংসারে যোগ করছেন বাড়তি আয় ।
বংশ পরম্পরায় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে হাতে-কলমের শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে প্রতিদিন জনপ্রতি ২ শ’ টাকা থেকে ৩শ’ টাকা পর্যন্ত পারিশ্রমিক পাচ্ছেন ছিপ তৈরির কারিগররা । এই ছিপ তৈরির পর বিপণন কাজেও যুক্ত হয়েছেন অনেকে ।
মানকোন ইউনিয়নের বাদে মাঝিরা গ্রামে ছিপ শিল্পের সাথে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে জড়িত অন্তত ৩ শতাধিক পরিবারের সংসারের কাজের পাশাপাশি বাড়তি একটি কর্মসংস্থান যুক্ত হয়েছে। বস্তুত বাদে মাঝিরা গ্রামের প্রায় সকল মানুষই কোনও না কোনও ভাবে ছিপ তৈরি ও বিক্রির কাজে যুক্ত । ঘরে ঘরে ছিপ তৈরির ক্ষুদ্র কুটির শিল্প গড়ে উঠছে। এখানকার তৈরি ছিপ দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় সরবরাহ করা হয়। উত্তরবঙ্গে এই ছিপের চাহিদা ব্যাপক ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সিলেটের সুনামগঞ্জ থেকে ছিপ তৈরির কঞ্চে বাঁশ ক্রয় করে আনা হয় । এরপর বাঁশ চেছে , ছেক দিয়ে আকা বাঁকা সোজা করা হয় ।ছিপের বাঁশ চাছার কাজে যুক্ত গৃহবধূ খাদিজা, হাসিনা, শারমিন, নাসিমা, তানজিলা ও স্কুল ছাত্রী রুবি জানান, সংসারের অন্যান্য কাজের পাশাপাশি ছিপ চাছার কাজে ব্যস্ত থাকেন। প্রতিটি বাঁশ চেছে মজুরি পান ১টাকা করে । প্রতিদিন ২শ’ থেকে ৩শ’ বাশ চাছা যায় । ছিপের বাঁশ আগুনে ছেকে সোজা করার কাজে যুক্ত রুবেল, শরাফত , কালু মিয়া জানান, প্রতিটি ছিপ তৈরি করে মজুরি পাওয়া যায় ৮ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত ।
বাঁশ ক্রয় ও ছিপ বিক্রির পাইকার আমিনুল ইসলাম জানান, শত বছর ধরে বংশ পরম্পরায় এই গ্রামে টিকে আছে শিল্পটি । সারাবছর এখানকার তৈরি ছিপের চাহিদা থাকলেও আষাঢ়, শ্রাবন ও ভাদ্র মাস ভড়া মৌসুম । সারা দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকাররা এসে এই গ্রাম থেকে ছিপ কিনে নিয়ে যান। উত্তরবঙ্গে তুলনামূলক চাহিদা বেশি ছিপের।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন