পৃষ্ঠাসমূহ

বুধবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

মুক্তাগাছায় কবিরাজি পেশা হারিয়ে যাচ্ছে


মনোনেশ দাস : মুক্তাগাছায় গ্রামাঞ্চলে সাধারণ মানুষের চিকিৎসায় জনপ্রিয় ছিল কবিরাজি চিকিৎসা। বংশ পরম্পনায় টিকে থাকত এই কবিরাজরা। কবিরাজি চিকিৎসায় যারা পারদর্শী ছিলেন তারাই এটিকে পেশা হিসাবে নিতেন । 



ওষধি গাছ ও উদ্ভিদের শেকড় , লতা- পাতা, গুল্ম সংগ্রহের মাধ্যমে আবার কেউ খাদ্যদ্রব্যে ঝাড়ফুকের ব্যবহার করতেন । রাস্তা- ঘাট, অনাবাদী জমি এমনকি প্রতিটি বাড়ির পাশে অপরিচর্যায় বেড়ে উঠতো, দন্ডকলস (দন কলশ) বা মধুগাছ কানশিকা, পদ্মগুলঞ্চ, লজ¦াবতি, আকন্দ, কালমেঘ, ঘৃতকুমারি, তেলাকুচো, পলতা, বৈচি, থানকুনি, কুলেখাড়া, ব্রাহ্মি, কলমি, হ্যালেঞ্চা শাক, গুল্ম, গাছালি। গাছ ও শাক গ্রামবাংলার রাস্তা ঘাটে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকত। কবিরাজি চিকিৎসার মূল উপাদান গাছ- গাছালি, শেকর-বাকড় ।


নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকেও কবিরাজি ব্যবসা জমজমাট ছিল । বিজ্ঞানের উন্নতিতে এ্যালোপেথিক বা রাসায়নির চিকিৎসার ব্যবহার বাড়ায় কমছে তারা । গাছ- গাছালি নির্র্ভর কবিরাজির আদলে ইউনানীর আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাতে অগ্রগতি আছে। ওষুধ উৎপাদন করে ফার্মেসীতেও তারা বিক্রি করছে । মুক্তাগাছার তারাটি এলাকায় রুটি পড়ে দিতেন হামিদ মৌলভি । চোর এই রুটি পড়া খেলে ধরা পড়ত । মানুষের বিশ^াস ছিল । তার মৃত্যুর পর রুটি পড়া হারিয়ে গেছে ।


আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্যের চিরঞ্জীব বনৌষধিতে প্রয়োগের উল্লেখ আছে জ¦রে নিসিন্দা পাতা, সর্দি কাশিতে বাসক, তুলসিপাতা। রক্তশূণ্যতায় কুলেখাড়া, বুদ্ধি বাড়াতে ব্রাহ্মি ও ধইঞ্চা। কৃমিনাশে কালমেঘ পাতা, আনারস পাতার রস হল মহৌষধ । পেটের পিড়ায় থানকুনি পাতা, গাঁদাল পাতা। রক্ত বন্ধে তুলসি, পাথর কুচি, গাঁদা বা কচার আঠা, আমাশয়ে ঢোলমানিকের পাতা ছাড়াও বিভিন্ন রোগে ব্যবহার হত চুতরা আর বিলেতি চোতরার । নিম, কচা আর আশ শেওড়ার ডালে দাত মেজে মজবুত রাখা হত ।

ময়মনসিংহ আয়ুর্বেদিক কলেজের প্রাক্তন অধ্যাপক আশিষ রায় জানান, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় এখনও গাছ- গাছালি ওষুধ হিসাবে ব্যবহার করে যাচ্ছি গম।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন