photo

মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট, ২০১৩

মুক্তাগাছার পূর্ব নাম ছিল বিনোদবাড়ি

মুক্তাগাছার পূর্ব নাম ছিল বিনোদবাড়ি। ময়মনসিংহ জেলা থেকে দশ মাইল পশ্চিমে এর অবস্থান। ১৮৭৫ সালে মুক্তাগাছায় মিউনিসিপ্যালিটি স্থাপিত হয়।পূর্বের আইন অনুসারে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পদাদিকার বলে মিউনিসিপ্যালিটির চেয়ারম্যান হতেন পরে যখন চেয়ারম্যান র্নিবাচনের ব্যবস্থা হলে মহারাজা সূর্যকান্ত প্রথম চেয়ারম্যান হিসাবে নিযুক্ত হয়। এখানে থানা, পোষ্ট অফিস, টেলিগ্রাফ অফিস স্থাপিত হয়। জমিদারদের আগমনের পূর্ব হতে এখানে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছিল, যা ১৮৯৪ খ্রীস্টাব্দে জমিদার রামকিশোরের নামে এটি স্থাপন করে ঊচ্চ ইংরেজী বিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হয়। জমিদাগন নিজেরাই এই বিদ্যালয়ের সমস্ত ব্য য়ের যোগান দিত। বড়ো হিস্যার মৃণালিনীদেবী তাঁর স্বামী নগেন্দ্রনারায়েণর নামে একটি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করে এটি পরে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরিণত হয়, র্বতমানে এই বিদ্যালয়টি নগেন্দ্রনারায়েণর ঊচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসাবে চলমান আছে মন্ডা মুক্তাগাছার একটি প্রসিদ্ধ সন্দেশ। কেবল মাত্র ছানা ও চিনি সংমিশ্রনো এটি প্রস্তুত করা হয়। তবে ইহা পাকের ভিতরে এমনি একটি বৈশিষ্ট্য আছে যা অন্য কোনটাতে নেই। মুক্তাগাছা মুলতো জমিদার বাড়িকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠে। জমিদার বাড়ির চারদিকে যে পরিখ গড়ে ওঠে তার পূর্ব পাশে কাটা হয় বিঞ্চুসাগর নামে একটি দিঘি এই দিঘির পৃর্ব ও পশ্চিম পাশে দুটি বজরা গড়ে উঠে এবং তা আস্তে আস্তে বড়ো রাস্তা পর্যন্ত প্রসার লাভ করে। বড়ো রাস্তার দুপাশে বসতি গড়ে উঠার ফলে বড়ো হিস্যার দক্ষিণে, বড়ো হিস্যা বাজার; দিঘির পৃর্ব পাড়ের বাজারের নাম আট-আনিবাজার এবং পশ্চিম পাড়ারে বাজার দরিচারি-আনি বাজার বসত। মহারাজার বাজারে অর্থাৎ আটানী বাজারে হাটের সাথে গো-হাট ছিল। কিন্তু পাকিস্তান হবার পর উক্ত গো-হাট মসজিদ র্নিমিত হওয়ার ফলে তা বন্ধ হয়ে যায়। প্রথম অবস্থায় মুক্তাগাছা জমিদারবাড়িকে কেন্দ্র করে তাদের লোকজন দ্বারাই গড়ে উঠে; এখানে ক্রমশ ব্যবসায়ীরা এসে ব্যবসা শুরু করে।১২৯৬ সালে এ স্থানের যথেষ্ট উন্নতি হয়। ইহার পর ১৩০৪ সালের ভূমিকম্পে সম্পর্ণ ভাবে বিধস্ত হয়ে যায়। এই ভূমিকস্পের ফলে মুক্তাগাছার একপ্রান্তে দ্বারালে অন্য প্রান্ত দেখা যেত। দুটি দালান ছাড়া অধিকাংশ দালানই সমূলে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। র্ধম: প্রথম বিশ্বযুদ্দের পর হতে শুরু করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্দের পর পর্যন্ত এর পরিধি ক্রমশ বাড়তেই থাকে। পাকিস্তান হবারপর হিন্দুরা চলে যেতে থাকলে এর বৃদ্ধি বাঁধা প্রাপ্ত হয়। তার পর থেকে এটি পুনরায় মুসলমান প্রাধান্যে হিসাবে গড়ে উঠে। প্রথম দিকে এই স্থানটি হিন্দু প্রধান হওয়ায় হিন্দুদের বিশেষ বিশেষ উৎসব-দিনে স্থানটি উৎসবমুখর হয়ে উঠত। উৎসব গুলো হচ্ছে: রথযাত্র, ঝুলনযাত্র, জন্মাষ্টমী, দূর্গাপূজা, লীপূজা, কালীপূজা, জগদ্ধাত্রীপূজা, রাসপূজা, সরস্বতী পূজা, দোলযাত্রা, শিবরাত্রী, বাসন্তীপূজা, অষ্টমীস্নান। শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণের জন্মশতবার্ষিকি উৎসবের পর সে উপলক্ষে তখনকার রাজা ছয় শজ্জা বিশিষ্ট একটি হাসপাতাল র্নিমান করার প্রস্তাব দেন এবং পরে তা চাঁদা তুলে সম্পন্ন করা হয়। যার নামকরন করা হয় মুক্তাগাছা আর্তাশ্রম।পাকিস্তান হওয়ার পর রাজারা রাজ্য ছেড়ে যাওয়ার পূর্বে এটি সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মুক্তাগাছায় প্রতিষ্ঠিত অন্যান্য দেবগ্রহের মধ্যে বিলামদেবী-প্রতিষ্ঠিত জোড়ামন্দিরে আনন্দময়ী কালী ও শিব উল্লেখযোগ্য।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন