
স্টাফ রিপোর্টার : মুক্তাগাছা উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি সমর্থিত নেতা কর্মীদেরকে পুলিশ হয়রানি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে । অভিযোগে প্রকাশ , প্রতিপক্ষ আওয়ামীলীগ নির্বাচনে ভোটারদের প্রভাব বিস্তার করতে সাজানো নাটক করছে । পুলিশকে দিয়ে তারা নেতা কর্মীদের দৌড়ে রেখেছে । মিথ্যা মামলা দিচ্ছে । মুক্তাগাছা উপজেলা বিএনপির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান খোকন জানান , পুলিশ আমাদের দলের নেতা কর্মীদের ভয় ভীতি প্রদর্শন করছে । পুলিশের সহযোগীতায় আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা খেরুয়াজানি ইউনিয়নের বিএনপি’র প্রার্থীদের কেন্দ্র ভাংচুর করেছে । খামারের বাজারের বিএনপি নেতা কালা মিয়াকে পুলিশ ধাওয়া করে । দুল্লার ছাত্রদলের আহবায়ককে দৌড়িয়েছে পুলিশ । বিএনপি’র উপজেলা চোয়ারম্যান প্রার্থী জাকারিয়া হারুন ( আনারস মার্কা) অভিযোগ করে বলেন , পুলিশ বিএনপি ও সহযোগী সংঠনের হিরা , মজনু , সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলমসহ অনেক নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে এবং হয়রানি করছে । তিনি সন্ত্রাসমুক্ত ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবী করে বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচনী পরিবেশ থাকলে বহু ভোটের ব্যবধানে আমি নির্বাচিত হব ।সার্বিক চিত্র :স্থানীয় নির্বাচন কমিশন অফিস সূত্রে জানা গেছে, দশটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে মুক্তাগাছা উপজেলা গঠিত। ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ৬৯ হাজার ৯১২ জন। ভোট গ্রহণ কেন্দ্র ১০০। নির্বাচনের দিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মোতায়েন থাকবে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশসহ আনসার সদস্য।ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ১৫ মার্চ। নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। হাট-বাজারসহ পৌর শহরের অলিগলিতে প্রার্থীদের নির্বাচনী পোস্টার, ডিজিটাল ব্যানার-ফেস্টুনে ছেঁয়ে গেছে। প্রচারণা চলছে ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত।
মুক্তাগাছায় আওয়ামী লীগের দুইজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পদক বিল্লাল হোসেন সরকারকে (ঘোড়া) দলের পক্ষ থেকে সমর্থন দেয়া হয়েছে। কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইছাহাক আলী সরকার (মোটর সাইকেল) বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর ১৯ দলের রয়েছে একক প্রার্থী। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এএসএম জাকারিয়া হারুন (আনারস)। আওয়ামী লীগে বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন।
তবে প্রচার-প্রচারণায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী এগিয়ে। আর ব্যক্তিগত যোগাযোগে বা জনসংযোগে এগিয়ে বিএনপি প্রার্থী। তিনি ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে দেখা করছেন, প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন।
আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ মরহুম অ্যাডভোকেট শামছুল হকের মৃত্যুর পর থেকে স্থানীয় আওয়ামী লীগে দলীয় কোন্দল শুরু হয়। আস্তে আস্তে তা প্রকট আকার ধারণ করে। এখন আওয়ামী লীগের এক অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি কেএম খালিদ বাবু ও সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন সরকার। অপর অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক এমসিএ খোন্দকার আব্দুল মালেক শহীদুল্লাহ, পৌর মেয়র আ. হাই আকন্দ ও সাবেক সভাপতি আবু তাহের সরকার ছানা মিয়া। এ উপজেলায় আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দলের কারণে অবস্থান ভালো না।
মুক্তাগাছা বরাবরই বিএনপির দুর্গ বলে পরিচিত। দলমত নির্বিশেষে সাবেক এমপি মোশাররফ হোসেনের গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি। সরেজমিনে জানা গেছে, মোশাররফ হোসেন সংসদ সদস্য থাকাকালীন রাজনীতিক সম্প্রীতির নজির স্থাপন করেছেন। তার আমলে কোনো রাজনৈতিক হানাহানির ঘটনা ঘটেনি। বিরোধী দলের নেতাকর্মীর নামে কোনো রাজনৈতিক মামলাও হয়নি। এটিই বিএনপির জন্য পজেটিভ দিক।
বিএনপি সমর্থিত দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী এএসএম জাকারিয়া হারুন মুক্তাগাছা নিউজকে জানান, “জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী। তারপরেও কিছু সমস্যা আছে। নেতাকর্মীদের মামলা থাকায় তারা প্রকাশ্যে আসতে পারছে না। এজন্য প্রচার-প্রচারণায় একটু সমস্যা হচ্ছে। তবে নেতাকর্মীরা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাচ্ছেন।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর নিশ্চিত পরাজয় জেনে দলীয় নেতাকর্মীরা প্রশাসনের সহযোগিতায় চর দখলের মতো ভোট কেন্দ্র দখলের কুমতলব আঁটছে। আমি আশা করি প্রশাসন তাদের পাতা ফাঁদে পা দেবে না।”
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন