মনোনেশ দাস : পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ময়মনসিংহে মুক্তাগাছায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে নতুন করে শুরু হয়েছে মেরুকরণ। মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টি , জাসদ ও বিদ্রোহী প্রার্থী ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
বিএনপির শরিকদেরও নেই প্রকাশ্যে কোনো তৎপরতা। সব মিলিয়ে ১৮৭৮ সালে গঠিত এই পৌর সভায় এতো জটিল নির্বাচন আর কখনও হয়নি। আর এবার মুক্তাগাছা পৌর নির্বাচনে চতুর্মুখী লড়াই হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন দুইবার নির্বাচিত বর্তমান পৌর মেয়র , সাবেক থানা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই আকন্দ।
বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম । জনপ্রতিনিধি হিসাবে তিনি এই প্রথম নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন ।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নারিকেল গাছ প্রতীকে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন সদ্য সাময়িক বহি:স্কৃত যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান দেবাশীষ ঘোষ বাপ্পী । স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাবি করা হলেও অনেকেই তাকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবেই দেখছেন।
জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতিক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন আতাউর রহমান লেলিন । মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার ক’দিন আগ পর্যন্ত বিএনপি’র প্রার্থী হিসাবে প্রচারণা চলালেও শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টিতে । গত নির্বাচনে তিনি বিএনপি’র বিদ্রোহী হয়েও মেয়র পদে নির্বাচন করে আশানুরুপ ভোট প্রাপ্ত হন । বিএনপি’র সাবেক এমপি আবু রেজা ফজলুল হক বাবুলর শেলক লেলিনের পিতা মরহুম তালেব আলী ছিলেন পৌরসভার ৩ বার চেয়ারম্যান ।
মশাল প্রতিক নিয়ে অংশ নেয়া শরিফুল ইসলাম বিপ্লব সারাজীবন জাতীয় পার্টির রাজনীতি করলেও এই নির্বাচনে জাসদের হয়ে প্রার্থী হওয়ায় আলোচনায় এসেছেন ।
আগামী দুই সপ্তাহ পরই ২ লাখ ৬৯ হাজার ৯১২ জন ভোটার নির্বাচন করবে তাদের নতুন পৌর পিতা। সকল প্রার্থীরাই পরির্বতন, শহরের প্রকৃত উন্নয়ন ও শান্তির জন্যে তাদের মার্কায় ভোট চাইছেন ।
মুক্তাগাছায় ব্যক্তি-বিশেষের সম্পর্কের কারণে ভোট দিলেও এবারই প্রথম ব্যক্তি সম্পর্কের বাইরে এসে নতুন করে দলীয় চিন্তা ভাবনা করছেন ভোটাররা। ধারাবাহিক উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীকেই ভোট দিতে হবে বলে যেমন প্রচারণা চালাচ্ছেন আওয়ামী লীগ আবার ১ম শ্রেণীর পৌরসভা হলেও মুক্তাগাছায় তেমন উন্নয়ন হয়নি দাবি করে ‘উন্নয়নের জন্যে পরিবর্তন’ শ্লোগান দিয়ে ভোট প্রার্থনা করছে বিএনপি। আর জাতীয় পার্টি বলছে এমপি যেহেতু আমাদের পৌরসভা আমাদের হলে যোগফলের লক্ষমাত্র বাড়বে ।
দেবাশীষ ঘোষ বাপ্পী বিদ্রোহী প্রার্থী থাকাতে এবং তার সঙ্গে প্রকাশ্যে দলের বেশ কিছু নেতা-কর্মী থাকাতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আব্দুল হাই আকন্দের জন্যে চ্যালেন্স হিসেবে দেখছেন অনেকে। আবুল হাইয়ের সমর্থকদের দাবি বড়দলে কিছু সমস্যা থাকলেও তাতে কোনো প্রভাব পড়বে না । কারণ হিসেবে তারা বলেছেন, দলের ভোটতো আছেই দলের বাইরেও রয়েছে তার একটা নিজস্ব ভোট ব্যাংক। গত নির্বাচনে আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদককে পরাজিত করে পৌর মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন ।
আ’লীগের নেতা-কর্মীরা বলছেন, সারা দেশের ন্যায় মুক্তাগাছাতেও শেখ হাসিনার সরকার যে উন্নয়ন করেছে তা অতীতে কোনো সরকারই করেনি। মানুষ এখন আর অতীতের কষ্টের, হাঙ্গামা আর নৈরাজ্যের সময়ে ফিরে যেতে চায় না ।তারা উন্নয়ন চায় আর তার জন্যেই শেখ হাসিন মনোনিত প্রার্থী আব্দুল হাই আকন্দকে নৌকায় ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন