photo

শনিবার, ৬ মে, ২০১৭

ময়মনসিংহে কাঁঠাল বাম্পার ফলন


মনোনেশ দাস : চলতি মৌসুমে ময়মনসিংহে কাঁঠালের বাম্পার ফলন হয়েছে। একটি পূর্ণ বয়স্ক গাছে ৫০০ থেকে ১৫০০ কেজি পর্যন্ত ফলন হয়েছে। জেলার ভালুকা, ফুলবাড়ীয়া ,মুক্তাগাছায় গড় অঞ্চল ছাড়াও ত্রিশাল, হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া, গফরগাঁও ছাড়াও প্রায় সকল উপজেলায় ধুম পড়েছে গাছ থেকে কাঁঠাল সংগ্রহ ও বাজারে এনে বিক্রির । ভালুকায় প্রায় ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় সোয়া ২ লাখ গাছে এবার কাঁঠাল ধরেছে । ফুলবাড়ীায় এবং মুক্তাগাছা উপজেলার চেচুয়া বিন্নকুড়ি, নালিখালি, বিন্নাকুড়ি ,দুল্লা, কালিবাড়ি, গাবতলী , ঘোগা, কাঠবওলা, পাহাড়পাবইজান, কমলাপুর, পোড়াবাড়ি, দাওগাও, বনবাংলা,কাশিমপুর, কালিবাড়ি,কাতলশাহ, খুকশিয়া , খেরুয়াজানি ইউনিয়নের উল্লেখিত গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে গাছে গাছে ঝুলছে কাঁঠাল আর ক^াঠাল । বাজারে প্রকার ভেদে প্রতিটি কাঁচা ও পাকা কাঠাল ৩০ টাকা থেকে ৮০/১০০শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ময়মনসিংহের বিভিন্ন হাট বাজার থেকে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন কাঁঠাল । কৃষি বিভাগ, কাঁঠাল ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ সূত্রে জানা যায় , খাদ্যমানে, কাঁচা কাঠাল ,মোচা, বীজ সবই উত্তমখাবার। এতে রয়েছে শ্বেতসার , আমিষ, ভিটামিন ও খনিজ লবণ। কাঁঠাল ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় এলাকায় ভাল ফলে, ঊষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়া কা্ঠাঁল চাষের জন্য উপযোগী । খুববেশী খরা এবং ঠান্ডা কাঁঠালের জন্য ক্ষতিকর। ময়মনসিংহ কাঁঠাল চাষের জন্য বিখ্যাত স্থান। কৃষি বিশেষজ্ঞ সূত্র জানায় , বীজ থেকে চারা তৈরির মাধ্যমে কাঁঠালের বংশ বিস্তার হয়ে থাকে। তবে কলম পদ্ধতিতেও এর চাষ করা যায়। বৈশাখ - জৈষ্ঠ মাস চারা লাগাবার উপযুক্ত সময়। চারা লাগাবার আগে ১০/১২ মিটার দূরত্বে ৯০ মিটার গভীর ও চওড়া গর্ত করে পরিমানমত জৈব সার , টিএসপি ও ছাই মিশিয়ে ১২/১৫ দিন পর চারা লাগাতে হয়। এক বছর বয়স্ক গাছে ১০ কেজি জৈব, ৩০০ গ্রাম ইউরিয়া,২০০ গ্রাম টি-এস-পি এবং ২৫০ গ্রাম এম-পি সার প্রয়োগ করতে হয়। জমি সব সময় আগাছামুক্ত রাখতে হয়।সবুজ সার প্রয়োগ করলে ভাল হয়।১০/১৫ দিন পরপর সেচ দিতে হয়। কাঁঠাল গাছে সাধারনতঃ ডলি ও ফল ছিদ্রকারী পোকার উপদ্রব দেখা যায়। আক্রান্ত গাছ ডাইমেক্রোন , রক্সিয়ন , সেভিন আথবা একই ধরনের ওষুধ দিয়ে স্প্রে করে সুফল পাওয়া যায় । মিলিবাগ নামক সাদাটে চ্যাপ্টা পাখা বিহীন এক ধরনের পোকার উপদ্রব কাঁঠাল গাছে দেখা যায় । এ পোকা কচি ডাল ও ফল থেকে রস চুষে খায় , তাতে ফুল ঝরে পড়ে। প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০/১৫ মিলিলিটার,নোভাক্রোন , ডায়াজিনন এবং ফল পচা রোগে ডাইথেন স্প্রে করলে সুফল পাওয়া যায়। গোলাপী রোগের আক্রমনে কচি পাতার তলায় গোলাপী রঙের আবরণ পড়ে তাতে পাতা ঝরে যায় এবং ডগা শুকিয়ে যায়। আক্রান্ত অংশ ফেলে তাতে কাঁটা অংশ সান্টার নামক ওষুধ লাগানো ভালো চাষীরা জানান , কাঁঠাল সংরক্ষণ সুবিধা রয়েছে । এছাড়া কাঁচা পাকা কাঁঠাল খুব সহজেই দূর-দূরান্তে চালান দেয়া যায়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন